সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে র্যাব-১১। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি সহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ অক্টোবর বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার তানভীর মাহমুদ পাশা।
তিনি জানান, গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ১২ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাহেবপাড়া এলাকায় প্রতারণা মূলক প্রতিষ্ঠান এন.আর.এস ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রদানের নামে সহজ সরল সাধারণ মানুষের নিকট হতে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং এমডি মোঃ সাইফুল ইসলামকে প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৭০টি ভিজিটিং কার্ড, ২০টি চাকুরী প্রত্যাশীদের ভর্তি ফরম, ১টি সীল, অফিস শর্তাবলীর ২০টি অঙ্গীকারনামা, ৩ জোড়া সিকিউরিটি ইউনিফর্ম ও ০২টি আয়-ব্যায়ের রেজিষ্টার জব্দ করা হয় এবং চাকুরী প্রত্যাশী ৮ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি এর নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একই দিনে র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুলা থানাধীন চাষাড়া তোলারাম কলেজ রোড এলাকায় অপর একটি প্রতারণা মূলক প্রতিষ্ঠান এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় এন.আর.এস ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ এর অনুরুপ প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অবস্থায় এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোঃ রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানটিও অনলাইনে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রদানের নামে প্রতারণা করে আসছিল।
এ সময় গ্রেপ্তারকৃত আসামীর নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১টি সীল, ২০টি চাকুরী প্রত্যাশীদের স্বহস্তে পুরনকৃত ভর্তি ফরম, ২টি এটিএম কার্ড, ৪টি টাকা রশিদের বই ও ৩টি আয়-ব্যায়ের রেজিষ্টার জব্দ করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, উক্ত প্রতিষ্ঠান দুটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোভনীয় বেতনে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। বিভিন্ন বেনামী কোম্পানীতে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক চাকুরী প্রত্যাশীদের নিকট থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি, মেডিকেল ফি ইত্যাদির কথা বলে জন প্রতি প্রায় ৭ থেকে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড, প্রজেক্ট হেলপার, মার্কেটিং ম্যানেজার, ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, রড মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রি প্রভৃতি পদে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের প্রলুব্ধ করত। উক্ত প্রতিষ্ঠান দুটি নারায়ণগঞ্জের সাহেবপাড়া ও চাষাড়ায় এলাকায় সুসজ্জিত অফিস ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন বেনামী প্রতিষ্ঠানের ভ‚য়া নিয়োগপত্র প্রদর্শন করে সাধারণ চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণা করত। পরবর্তীতে ঘনঘন অফিস পরিবর্তন করে তারা প্রতারণামূলকভাবে সাধারণ চাকুরী প্রত্যাশীদের মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। চাকুরী প্রত্যাশীরা মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে চাকুরী না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ভয়-ভীতি, হুমকি প্রদর্শন এমনকি মারধরও করত। বিগত ৬ মাসে এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১২ শতাধিক মানুষের নিকট হতে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানটি পূর্বেও বিভিন্ন নামে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এরুপ প্রতারণা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।