সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির তাদের লাঙ্গল প্রতীকের ৪টি ইউনিয়নে শক্তিশালী চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ৪টি ইউনিয়নেই লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। এর কারন হিসেবে স্থানীয়রা বলছেন- এখানে নৌকা প্রতীকের দুটি ইউনিয়নে লাঙ্গল প্রতীকের কাছে নৌকার প্রার্থী অনেকটা ড্যামী প্রার্থী স্বরূপ, বাকি দুটি ইউনিয়নে বিতর্কিত দুই ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেরার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে ৮টি ইউনিয়নেই প্রার্থী দিয়েছে। যার মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকের শক্ত প্রার্থী দিয়েছে।
এখানে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে লড়াইয়ে নেমেছেন সাদিপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল হাসেম। তার প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা। গত নির্বাচনেও আবুল হাসেম ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের দাবি। কিন্তু নৌকার প্রার্থী জোর করে জয় ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু এবার জাতীয় পার্টি এখানে কোনো জোর জুলুমকে ছাড় দিবেন না। একই সঙ্গে পূর্বের মত রশিদ মোল্লার সেই জনপ্রিয়তা নাই। পূর্বের চেয়ে এখানে জাতীয় পার্টিও বেশ শক্তিশালী।
জামপুর ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে জামপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আশরাফুল মাকসুদ ভুঁইয়া মনোনিত হয়েছেন। তার জয় অনেকটাই নিশ্চিত। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন যিনি বিগত নির্বাচনে মেম্বার পদে পরাজিত হয়েছিলেন সেই হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া। বর্তমান চেয়ারম্যান হা-মীম সিকদার শিপলু মনোনয়ন পাননি। ফলে আশরাফুল মাকসুদ ভুঁইয়ার জয় অনেকটাই নিশ্চিত ধরেছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রব তার নিজ ইউনিয়ন শম্ভুপুরায় লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলার আসামি ও বালু মহালের নিয়ন্ত্রক নানা বিতর্কে বিতর্কিত ওয়ার্ড মেম্বার নাছির উদ্দীন। এ বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়ও খবর বেরিয়েছে। এ ছাড়াও নানা অভিযোগ ওঠেছে এসেছে ইত্তেফাক পত্রিকায় নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। এখানে জাতীয় পার্টি বেশ শক্তিশালী। সেই সঙ্গে প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাধারণ ভোটার ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ফলে এখানেও লাঙ্গলের জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
এদিকে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল হককে মনোনয়ন বঞ্চিত করে নৌকা প্রতীক মনোননয়ন দেয়া হয়েছে বিএনপির পরিবারের লোক হিসেবে পরিচিত ও নব্য আওয়ামীলীগার ব্যবসায়ী লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুলকে। তার মনোনয়নে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নব্য আওয়ামীলীগার লায়ন বাবুলকে সাধারণ মানুষ ভোট দিবে না জানান। এখানে লাঙ্গল প্রতীকে লড়াইয়ে নেমেছেন দাইয়ান মেম্বার। জহিরুল হক নির্বাচন না করায় তার ভোট ব্যাংক চলে যাচ্ছে দাইয়ান মেম্বারের দিকে। কারন তারা দুজন আত্মীয়। এখানেও জাতীয় পার্টি বেশ শক্তিশালী এবং নৌকার প্রার্থী দূর্বল। ফলে এখানে লাঙ্গলের জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
অন্যদিকে একইভাবে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান ইউসুফকে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক দেয়া হয়নি। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন। এখানে এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান নির্বাচন করলে আব্দুল বাতেন হবে তার ড্যামী প্রার্থী স্বরূপ। এখানে শক্ত প্রার্থী থাকলে বাতেনের জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। এখানে ইউসুফ দেওয়ানের নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে বেশ।