সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে আবারো ভিন্ন মেরুকরণের চেষ্টায় নেমেছেন নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে বেশকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। মুলত সোনারগাঁয়ের সিংহভাগ রাজনৈতিক ও রাজনীতি এখন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার নিয়ন্ত্রণে।
২০১৬ সালে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বছর খানিক আগে থেকেই সোনারগাঁয়ে পদচারণা শুরু করেন এমপি বাবু। শেষ পর্যন্ত তিনি সেখানে ব্যর্থ হোন। কিন্তু এমপি বাবুর নিজ সংসদীয় এলাকা আড়াইহাজারে তার একক আধিপত্য, সেখানে কারো খবরদারি চলে না। এমনকি জেলা আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনো কর্তৃত্ব আড়াইহাজারে নেই বললেই চলে। এবার জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর মাধ্যমে সোনারগাঁয়ে পদচারণা শুরু করেছেন এমপি বাবু। যদিও সোনারগাঁয়ে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের সঙ্গেও এমপি বাবুর সখ্যতা রয়েছে। কিন্তু শামীম ওসমানের বলয়ে রাজনীতি করা বিরুর মাধ্যমে যখন এমপি বাবু সোনারগাঁয়ে তখন নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী হুমায়ুন কবির ভুঁইয়ার নির্বাচনী প্রচারণায় উঠান বৈঠক ও প্রচার-প্রচারনা এবং বিনিময় সভা করেছেন এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, আবু জাফর চৌধুরী বিরু। যেখানে প্রার্থী নিজেও উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এই সভা করা হয়। ১০ নভেম্বর জামপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় নৌকার প্রার্থী হুমায়ুনের নির্বাচনী আচরনবিধি ভঙ্গ করে জামপুর কোবাগা এলাকায় সমাবেশ করে মতবিনিময় সভা করা হয়। এখানে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রয়েছেন আশরাফুল মাকসুদ ভুঁইয়া। ইতমধ্যে তার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালিয়েছে নৌকার প্রার্থী ও তার লোকজন। ওই সময় অভিযোগ ছিল আড়াইহাজার থেকে লোকজন এনে এই হামলা চালানো হয়।
তবে শীর্ষ নেতাদের সূত্রে জানাগেছে, সোনারগাঁয়ে এমপি বাবুকে নিয়ে বিরুর মাতামাতির বিষয়ে চরম ক্ষুব্ধ
এমপি শামীম ওসমান। যদিও এর আগেই বিরু শামীম ওসমানকে পল্টি দিয়েছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেলে সোনারগাঁয়ে প্রচারণা চালানো হয় বিরুর মাধ্যমে সামসুল ইসলাম নৌকা পেয়েছেন। এমন ভুয়া প্রচারণার কারনে বিরুকে শামীম ওসমান শাসিয়ে দেন। একইভাবে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে জেলা আওয়ামীলীগ শোকজ করলে এবারও বিরু প্রচারণা চালান তার ইশারায় জেলা আওয়ামীলীগ কায়সার হাসনাতকে শোকজ করেছে। মুলত আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বিরুর বিরাট বিশাল আধিপত্য রয়েছে সেটা বুঝাতে গিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বোকা বানানোর চেষ্টা করেন। এসব কারনে শামীম ওসমান তাকে সতর্ক করেন। যে কারনে বিরু ওসমান বলয় থেকে সটকে পড়ে এখন বাবু বলয়ে।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে আড়াইহাজারে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে শামীম ওসমানের জন্য নির্ধারিত চেয়ার রাখা হয়নি মঞ্চে। মঞ্চে শামীম ওসমানকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। তারপর থেকে এমপি বাবুর প্রতি চরম ক্ষু্ব্দ শামীম ওসমান। একই সঙ্গে সোনারগাঁয়ের রাজনীতি শামীম ওসমান নিয়ন্ত্রন করেন। সান নারায়ণগঞ্জে অনেকেই জানিয়েছেন আড়াইহাজার ঘেষা হওয়ায় এমপি বাবুও বারবার চেষ্টা করছেন সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে হাত বসাতে। কিন্তু সেটা শামীম ওসমানের বাধায় পাড়ছেন না। বেশকবার হাসনাত পরিবারের ভরে করে সোনারগাঁয়ে ডুকার চেষ্টা করেছিলেন। এবার বিরুর মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের উত্তরাঞ্চলে ডুকেছেন এমপি বাবু।