খালেদা জিয়ার জন্য নিজের জীবন দিতে পারি: মাসুকুল ইসলাম রাজীব

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের জন্য নিজের জীবন দিতে পারেন বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি বলেছেন, আমি নিঃস্বার্থভাবে আত্মত্যাগ করার মানসিকতা রাখি। আমি দলের প্রয়োজনে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়োজনে, জিয়া পরিবারের জন্য নিজের জীবন দিতে পারি। সে কারনেই আমি প্রতিবাদ করতে পারি। সুতরাং ভয়ের কিছু নাই। আমি কারো চাকুরী করি না। কারো পয়সায় চলি না। দল করি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং জিয়া পরিবারের জন্য।

তিনি আরও বলেছেন, বিএনপির ব্যর্থতার জন্যই আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেল খাটছেন। আর কতদিন অন্যায় দেখে চুপ করে থাকবেন সিনিয়র নেতারা? শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করেন কিন্তু আমি সরকারের সমালোচনা করতে ইচ্ছুক নই। এই কারনেই নই সরকার আমাদের দূর্বলতা পেয়েছে, দূর্বল থেকে দূর্বলত্ব করে দেয়ার সুযোগ আমরাই করে দিয়েছি। যে কারনে সরকার আজকে আমাদের উপর জুলুম করতে পেরেছে।

তিনি আরও বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বালুর ট্রাক দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। বাংলাদেশে লাখ লাখ নেতাকর্মী ছিল। ঢাকায় হাজার হাজার নেতাকর্মী ছিল। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গেলে তাদের জন্য নারায়ণঞ্জের নেতাকর্মীরা লাথি আর থাক্কায় দাড়াতে বসতে পারতোনা। তাদের অত্যাচারে। কিন্তু নেত্রীকে যেদিন বালুর ট্রাক দিয়ে আটকে রাখা হলো সেদিন একজন লোক, একজন বিএনপি নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্ধার করতে যাননি। তাহলে কেন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার মুল্যায়ন করবে? যারা লাখ লাখ নেতাকর্মী আছে তাকে তার বাড়ির সামনে দুই দিন বালুর ট্রাক দিয়ে আটকে রাখা হলো সেখানে একজন নেতাকর্মীরা গেল না। তাকে তো সরকারের পূজা করার কিছু নেই। সেটাই করেছে সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল করে খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে আসলেন।

৩১ মার্চ রবিবার বিকেলে মাসদাইরে মজলুম মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা: গণতন্ত্র দেশনেত্রীর মুক্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব।

এর আগে তিনি বলেন, স্বাধীনতায় অবদান রেখেছিলেন আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই গণতন্ত্র আজকে বাংলাদেশ থেকে বিলিন হয়ে গেছে।


আলোচনা সভায় নারায়ণগঞ্জে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে যারা গুলি খেয়েছেন, মামলা খেয়েছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারাও দলের পদ পদবী পায়না। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে সরকারি দলের রাজনীতি করে, আওয়ামীলীগ করে, জাতীয়পার্টি করে তারাই দলের কমিটিতে বড় বড় পদ পদবী পায়। বিস্ময় প্রকাশ করে এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

তিনি বলেছেন, আমার মত যারা গুলি খেয়েছেন তারাও এখন দলের পদ পদবী পায়না। তারপরেও আমরা রাজনীতিটা করি দলকে ভালবাসি বলেই।

তিনি দাবি করেন-দলটা এখন কোন সাংগঠনিক নিয়মে চলছে না। চলছে এখন কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাধ্যমে। দল তিনটি ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নাই। এক এগারো থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করে নাই। দলের দুঃসময় আসবে। গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করেনি। আমি বলেছিলাম দলে তিনটি তালিকা করতে হবে। যেখানে একটা তালিকায় থাকবেন যারা ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। আরেকটা তালিকা হবে যারা নির্বাচনটা করে নাই। তৃতীয় তালিকায় থাকবে যারা নির্বাচন করছে কিন্তু দলের বিরোধীতা করে আওয়ামীলীগ জাতীয়পার্টির পক্ষে কাজ করেছেন তাদের একটা তালিকা।

আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, যারা হামলা মামলা নির্যাতনের ঝুকি নিয়ে নির্বাচনটা করেছে আমি মনে করি তাদের হাতেই দলের দায়িত্বটা দিতে হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যারা প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের মঞ্চে ওঠে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, যারা জাতীয়পার্টির মঞ্চে ওঠে লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছে তাদেরকে দিয়েই কমিটি হচ্ছে। আমি বিএনপি করব। নিজস্ব স্টাইলে করব। কিন্তু এদের সঙ্গে কোন রাজনীতি করবনা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে এ ছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, প্রবীণ বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন কালু, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা, মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় ওলামাদলের সহ-সভাপতি মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু, মহানগর যুবদলের সভাপতি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভূঁইয়া, আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান খান খোকা, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি নাছির উদ্দীন, জেলা শ্রমিকদল নেতা রবি মেম্বার, মহানগর বিএনপি নেতা শাহজাহান খন্দকার, আবুল কালাম আজাদ, আক্তার হোসেন খোকন শাহ, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন আহমেদ রিয়াদ, সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, মহানগর যুবদল নেতা সরকার আলম, আল আমিন খান, সরকার মুজিব, বন্দর থানা যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন, বন্দর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক নেতা শাহাদুল্লাহ মুকুল প্রমূখ।