সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ শক্তিশালী মানেই হলো একেএম শামীম ওসমানের নেতৃত্বে। যে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝান্ডা ধরে আছেন, সেই শামীম ওসমানকে কোণঠাসা করতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে নীল নকশা তৈরি করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। যার ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগের রাজপথের নেতাকর্মীদের দ্বারা গঠিত কমিটিগুলোকে একের পর এক বাতিল করা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
নেতাকর্মীরা মনে করেন, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানকে দমাতে পারলে আওয়ামী লীগকে বাম দলে পরিণত করা যাবে। যেসব নেতাকর্মীরা রাজপথে আওয়ামীলীগের ঝান্ডা ধরে আছেন, তাদেরকে মাইনাস করে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানকে কোণঠাসা করতে এমন নীল নকশা তৈরি করা হয়েছে।
রাজপথের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে- তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ করেনি। যদিও নির্বাচনের শুরু থেকে রাজপথের এইসব নেতাকর্মীরা মান অভিমান নিয়ে কিছুটা নীরবতা পালন করলেও শেষতক হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে নৌকার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়েন। শামীম ওসমানের বিশাল কর্মীবাহিনী যখন নৌকার পক্ষে মাঠে নেমে যান তখন নৌকার বিজয় ত্বরান্বিত হয়। কিন্তু স্থানীয় রাজনীতিতে যে সমস্যা সেই সমস্যা নিরসন না করেই কেন্দ্রীয়ভাবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নৌকার পক্ষে মাঠে নামানো হয়।
যেখানে মেয়র আইভী ও তার লোকজন দ্বারা মামলার শিকার হয়েও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামেন। কিন্তু তারপরেও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বেশ কয়েকটি কমিটি বিলুপ্ত করানো হয়। রাজপথে যেসব নেতাকর্মীরা অন্যান্য কমিটিতে রয়েছেন এখন তাদেরকেও মাইনাস করে কমিটি বিলুপ্ত করে অযোগ্যদের হাতে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগকে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন- আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান মানেই আওয়ামী লীগ। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী শক্ত অবস্থান নারায়ণগঞ্জ থেকে দুর্বল করার চেষ্টায় নেমেছেন একটি পক্ষ। মুলত ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে নানা অজুহাত কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তুলে ধরে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার পাঁয়তারা চলছে।
যে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের এক ডাকে লাখো নেতাকর্মী রাজপথে নামেন, সেই শামীম ওসমানকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোণঠাসা করা হলে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ হবে বাম রাজনৈতিক দলে পরিণত। একই সঙ্গে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ যখন বিভিন্ন সংগঠনে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে সেখান থেকেও যোগ্য নেতৃত্বকে মাইনাস করার চেষ্টা চলছে।
নেতাকর্মীদের আরও অভিযোগ- নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় বেশকিছু নেতা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের নয়ছয় বুঝিয়ে শামীম ওসমান ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে কানপড়া দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও কানপড়ায় মুগ্ধ হয়ে যাচাই বাছাই না করেই আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের সিংহ পুরুষ খ্যাত শামীম ওসমান কেন্দ্রীয় নেতাদের তোয়াক্কা করেন না কিংবা কেন্দ্রীয় নেতাদের তোষামোদিও করেন না। যার ফলশ্রুতিতে কেন্দ্রীয় বেশকিছু নেতা শামীম ওসমানের প্রতি নারাজ ও নাখোশ। এর ফলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ইস্যু করে শামীম ওসমানের উপর ঝাল মেটানোর চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় বেশ ক’জন নেতা।
এখন শামীম ওসমানকে কোণঠাসা করার নীল নকশা বাস্তবায়ন হলে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ। সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হুটহাট করে বেশকটি কমিটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র ও নীল নকশার পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় নেতারা। তারা মনে করেন- এই বিষয়টি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর তুলে ধরা প্রয়োজন। নারায়ণগঞ্জে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন, বিএনপি জামাতের সাথে আঁতাত করে কিংবা বাম দলের নেতাদের নিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন কিংবা নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনীতি করেন তারাই চাচ্ছেন শামীম ওসমানকে কোণঠাসা করে দুর্বল নেতৃত্বকে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের চেয়ারে বসিয়ে আওয়ামী লীগকে বাম দলে পরিণত করা।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা আরো বলেন, বিগত সময়ে মেয়র আইভী ও তার লোকজন দ্বারা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মামলার শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে মিথ্যা মামলা ঘাড়ে নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজনকে। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে সুজন মারা গেলেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একটি শোক প্রস্তাবও করেননি। এমনকি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মিজানুর রহমান সুজন-এর প্রতি শোক প্রস্তাব কিংবা শোকসভা কিংবা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে একটি সভাও করা হলোনা।
অথচ এই মিজানুর রহমান সুজন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন অনেক স্বচ্ছতার সাথে। সেই মিজানুর রহমান সুজনকে মামলা কাঁধে নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে হলো। তারপরেও এমন পরিস্থিতিতে শামীম ওসমান ও তার বিশাল কর্মীবাহিনী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আইভীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নামেন। যার ফলশ্রুতিতে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হয়। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেয়র আইভীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন সভার মাঝেই জানতে পারেন মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তীতে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ শ্রমিক লীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে দলটির নেত্রী শেখ হাসিনার নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করে যান নেতাকর্মীরা। মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার পরেও তারা নৌকার পক্ষে মাঠে কাজ করেন।