হাটের টেন্ডার নিয়ে সোনারগাঁয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৫

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত কাইকারটেক হাটের ইজারা নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। যার মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
১৬ই ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লাঠিচার্জ করে দুই গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন যাবৎ কাইকারটেক হাটের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু অনুগামী নেতাকর্মীরা। এবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী শাহ মোঃ সোহাগ রনির অনুগামী নেতাকর্মীরা দরপত্র দাখিল করতে গেলে নান্নুর নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ১৩জনকে রক্তাক্ত জখম করে। একই সময়ে যুবলীগের দুই কর্মীও আহত হন। এ ঘটনায় হাজী সোহাগ রনি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১৩টি স্থায়ী হাটের দরপত্র জমা দেওয়ার দিন ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঐতিহ্যবাহী কাইকারটেক হাটটি ইজারা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর সমর্থক রোমান বাদশা হাট পরিচালনা করে আসছিল। বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির সমর্থক সজল মিয়া তার লোকজন ওই হাটের দরপত্র জমা দিতে গেলে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নান্নুর অনুগামী মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব, যুবলীগ কর্মী সাগর, হৃদয়, অনিক, পলাশ, পায়েল সহ ২০/২৫ জনের একদল যুবলীগের নেতাকর্মীরা এসে বাধা দেয়।
এতে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে গেলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। সংঘর্ষে সোহাগ রনির সমর্থক শেখ মেহেদী হাসান, সজল মিয়া, জাবেদ মিয়া, পারভেজ মিয়া, রানা, মিরাজ হোসেন, আব্দুল আলী ও বাবুসহ ১৩ জন আহত হয়। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর পক্ষের ফারুক প্রধান, রবিউল প্রধান আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে সোহাগ রনির সমর্থক শেখ মেহেদী হাসান, জাবেদ ও সজলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপজেলা পরিষদ থেকে বের করে দেয় এবং উপজেলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিম মিয়া অভিযোগ করেন, যুবলীগের সমর্থকরা দীর্ঘ দিন ধরে হাটটি পরিচালনা করে আসছিল। আমরা এ বছর টেন্ডার জমা দিতে গেলে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব মিয়া জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আমাদের কথাকাটাকাটি হয়েছে। তারা যুবলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।