সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
ভুলক্রমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বেফাঁস বক্তব্যটি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মাহাবুবুর রহমান বাবুল। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী সহ দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এর আগে তিনি বক্তব্যটি তার নিজের বলেও দাবি করেন।
১৮ই ফেব্রয়ারী শুক্রবার বিকেলে উপজেলা মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় একটি রেষ্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সকল দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১২ই ফেব্রুয়ারি রাতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভাষাগত ত্রুটি হয়েছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই। এছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতিটি নেতাকর্মী যারা ব্যতীত হয়েছেন। তাদের কাছে ক্ষমা চাই।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে যে কোন বক্তব্য দেওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করব। আমাকে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে উন্নয়নের অগ্রগতির মহাসড়কে থেকে যেন কাজ করতে পারি এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বারদী ইউনিয়নে চোর-ডাকাত, মাদক বেড়ে যাওয়ার কারণে ৯ জন পুরুষ সদস্য ও তিনজন মহিলা সদস্যদের নিয়ে প্রতি সপ্তাহে ইউনিয়ন পরিষদে সভা করে কাজ করে আসছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তখনও মাদক, ডাকাত ও সন্ত্রাসের হাত থেকে আমরা রেহাই পাচ্ছি না। ফলে প্রশাসনের কাছে ও ইউএনওকে সাহেবকে আমি জানিয়েছি। ইউএনও সাহেব এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল নির্বাচনের পূর্বে ও পরে আমাকে হেয় করার জন্য আমার প্রতিটি কাজে বাধার সৃষ্টি করছে। পরে তিনি দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিতর্কিত ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যানের বেফাঁস বক্তব্যের বিষয়সহ বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ ১৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার জরুরি সভা আহ্বান করেছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বারদী ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলের বেফাঁস বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি বলেছিলেন, আমি বারদীর ম্যাজিস্ট্রেট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারদী আসলেও আমার হুমুক লাগবে। তিনি আরও বলেছিলেন, প্রশাসন আমার পক্ষে কাজ করবে, কারও ফোনে প্রশাসন আসবে না। আমি বাবুল যদি বলি সুইচ অফ, দিস ইস অফ। কারন আমার যোগ্যতায় আমি চেয়ারম্যান হয়ে আসছি।
চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল (লায়ন বাবুল) আরও বলেছিলেন, ১৯৭৪ সালের পরে বারদীতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়নি। এটা আপনাদের গর্ব আপনারাই ধরে রাখতে হবে। আমাকে কিলাইবে আপনারা হাত-পা ধরে বসে থাকবেন আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আগের দিন ভূলে যেতে বলেন বর্তমানে লায়ন বাবুল বারদীর চেয়ারম্যান। শান্তিরবাজার কারও বাপ-দাদার নয়, কেউ জামেলা সৃষ্টি করলে হাত-পা ভেঙ্গে আমাকে ফোন দিবেন, তা না হলে আমাকে ফোন দিবেন না। হাত-পা ভেঙ্গে দিলে তাকে আমি এসে তাকে উদ্ধার করবো। শান্তির বাজারে কেউ মহড়া দিলে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ না করলে আপনাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা মারমু। চোর-বাটপার আমকে কি বলবে আমার বা….ও আসে না।’ তার এমন বক্তব্য স্থানীয় গণমাধ্যম সহ জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এ ঘটনায় ১৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান বেফাঁস ও অশালীন বক্তব্যের কারণে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে সাময়িক ভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একই সাথে স্থায়ী বহিষ্কার এর জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।