সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির যেসব নেতাকর্মী ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নিবাচনের পূর্বে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে নিয়ে মাতামাতি করেছিলেন সেইসব নেতাকর্মীরাই বিএনপি থেকে মাইনাস হয়েছেন। মুলত সেই সময় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি গিয়াসের কব্জায় নিয়ে যাওয়া্র চেষ্টা করা হয়েছিলো। সেই সময় থেকে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নান চরম ক্ষুব্দ ছিলেন। যারা এতদিন যাবত সোনারগাঁওকে গিয়াসের বিকল্প আসন হিসেবে চিন্তা করে কাজ করে আসছিলেন তাদেরকে সন্দেহের দৃষ্টিতে রেখে বিএনপির মুলধারা থেকে মাইনাসের কাজটি সেরেছেন মান্নান।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সোনারগাঁয়ে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসকে নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন উপজেলা বিএনপির ওই সময়কার সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। যদিও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন হয় সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসন হিসেবে। তাদের ধারণা ছিলো ১৪ সালের নির্বাচনটি হয়তো সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা নিয়েই হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। কিন্তু তার আগেই সোনারগাঁয়ে মান্নানকে মাইনাস করতে খন্দকার আবু জাফর ও তার অনুগামীরা গিয়াসকে সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় নামেন।
ওই সময় গিয়াসের পক্ষে খন্দকার আবু জাফর ছাড়াও বিএনপি নেতা শাহআলম মুকুল, যুবদল নেতা শহিদুর রহমান স্বপন, আশরাফ প্রধান সহ বেশকজন জোরেসোরে কাজ করেন। মান্নান যখন সাবেক এমপি রেজাউল করিমকে কোনঠাসা করেছিলেন ঠিক সময় মান্নানের বাধা হয়ে দাঁড়ায় গিয়াস। আর গিয়াসকে নিয়ে মাঠে নামেন উপরোক্ত নেতারা। ফলে মান্নান এসব নেতাদের বিশ্বাস করতে পারেনি। যে কারনে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন কমিটি থেকে এদেরকে মাইনাস করা হয়েছে। যার দুরণ দলীয় প্যাডে ভুল লেখার অজুহাতে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়। এই মামলার বিষয়ে মান্নানের লোকজনের দাবি মামলার পেছনে গিয়াসের ইন্ধন ছিলো। মামলার জন্য যুবদল নেতা শহিদুর রহমান স্বপনকে দোষারোপ করা হয়। যে কারনে জেলা যুবদলের কমিটি থেকে স্বপনকে মাইনাসের কাজটি ঠিকঠাক মত করেছেন মান্নান। রানিং কমিটির জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে স্বপনকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি হলো।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে আরো জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর সোনারগাঁও থানা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে আহ্বায়ক ও মোশারফ হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়। এই কমিটি গঠনের শুরু থেকেই সমালোচনা শুরু হয়। পরে উপজেলার দশটি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে মামলার মুখোমুখী হয় সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি। ইউনিয়ন কমিটি গঠনে দলীয় প্যাডে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অমর হিসেবে লেখায় মামলা করে দেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রাসেল রানা। মুলত ইউনিয়ন কমিটি গঠনে নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হিসেবে এই ইস্যূতে মামলাটি দায়ের করা হয়। যদিও পরবর্তীতে মামলাটি রাসেল রানা প্রত্যাহার করে নেন।
তবে উপজেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম ও রাসেল রানার বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়ে নানা কুৎসা রটানো শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁয়ে ছাত্রদলের ব্যানারে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন মান্নান অনুগামী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। যদিও আগের দিন মান্নান ও মোশারফের বিরোধীরা একজোট হয়ে সভাও করেছেন। যেখানে বিএনপির নেতা শাহআলম মুকুল, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, যুবদল নেতা শহিদুর রহমান স্বপন ও আশরাফ প্রধান সহ অনেক নেতারাই উপস্থিত ছিলেন।