সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
কার বংশের কতটুকু গৌরব এমন বিষয় নিয়ে অহেতুক তর্কে জড়িয়ে সেই তর্কে রূপ নেয় দুই গ্রুপের মাঝে সংঘষে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। পাল্টা বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এমন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নে বারদী বাজারে ১৩ এপ্রিল বুধবার সকালে আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের লোকজনদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫জন আহত হয়েছে। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক। ঘটনার পর থেকে পুরো বারদি এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আগের দিন মঙ্গলবার ইফতারের পর বারদী বাজারে মুজিবুর ও হাসান নামের দুই ব্যক্তির মধ্যে নিজেদের বংশ নিয়ে তর্ক হয়। তর্কের এক পর্যায়ে মুজিবুর পক্ষের লোকজন হাসানকে মারধর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র তাদের ঘনিষ্ট জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু ঘটনাস্থলে এসে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল মেম্বারের লোকজন জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু’র অতর্কিত হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, টেঁটা, রামদা, লাঠিসোটায় সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষে জাকির পক্ষের জাকির সরকার, জামাল, মাসুম সরকার, বাসেদ সরকার, মামুন সরকার, সামসুল, হুমায়ুন সরকার ও হাসান এবং জহিরুল পক্ষের তাইজুল ইসলাম, হযরত আলীসহ ১৫ জন আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অবস্থার আশংকাজনক হওয়ায় জাকির সরকার, জামাল, সামসুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছ।
এদিকে সংঘর্ষের পর বারদি বাজারে জহিরুল হকের লোকজন উত্তেজিত হয়ে জাকির সরকারের পক্ষের মামুন সরকার, মাজহারুল সরকার, রাকির সরকার, জাহাঙ্গীরসহ ৫/৬ জনের দোকান ভাংচুর লুটপাট চালায়। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ৩ জনের বাড়িঘর ভাংচুর ও ইব্রাহিম ইবুর একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবুর অভিযোগ, নির্বাচনের পর থেকে বারদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হক তার দূর সম্পর্কের ভাতিজা নাজমুল হককে নির্বাচন প্রভাবিত করে নির্বাচিত করায়। পরবর্তীতে বারদি বাজারে আমাদের লোকজনকে কোনঠাষা করে রাখে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। সংষর্ষের ঘটনায় আমাদের ১৫জন আহত হয়।
বারদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হক জানান, বারদি মারকাজ মসজিদের পাশে একটি সরকারী পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরে মাছ চাষ করে মসজিদের আয় ও ব্যয় নির্বাহ করা হয়। সম্প্রতি জাাকির সরকারের পক্ষের আমিনুল ইসলাম, মাসুদুর রহমান, মামুন নামের তিনজন ওই পুকুর লিজ নিতে উঠে পড়ে লাগে। এতে কথাকাটাকাটি হওয়ার এক পর্যায়ে সংষর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের ৫ জন আহত হয়েছে। অপরদিকে, হবু নিজ ঘরে আগুন দিয়ে নাজমুলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান স্থানীয় গণমাধ্যমে জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোন পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেননি।