সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে র্যাব-১১ অভিযান চালিয়ে ডাকাতির বিপুল পরিমান সরাঞ্জামাদি সহ ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৬ মে সোমবার দুপুরে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর হাসান শাহরিয়ার।ঠ
তিনি জানান, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত ডাকাতি সংক্রান্ত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এলাকার সাধারণ জনগণ ও মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীসাধারণের মধ্যে ব্যপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ডাকাতির ঘটনাগুলো নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় গণমাধ্যমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে র্যাব ঘটনা সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা শুরু করে।
লক্ষ্য করে দেখা যায় যে, গত বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূর্ধষ ডাকাতির সবগুলি ঘটনা প্রায় একই ধাঁচের। এতে ধারণা করা যায়, একটি বড় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অত্র এলাকাসমূহতে পরিকল্পিতভাবে ডাকাতি করে আসছে। র্যাবের একটি চৌকস গোয়েন্দা দল গোপনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাত প্রবণ এলাকায় কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা এলাকার কিছু সক্রিয় ডাকাত সদস্যকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
র্যাব জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিএসসি এর একটি আভিযানিক দল কর্তৃক ১৫ মে রবিবার গভীর রাতে অভিযান পরিচালনা করে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানাধীন সোনাখালী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৬ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন ওলিপুরা বাজার মধ্যপাড়া নানাখি এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে আজিজুল ইসলাম, বন্দর থানাধীন শারেং সরকার চাপাতলী এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইদুর, ওলিপুরা নানাখি মধ্যপাড়া এলাকার দায়েনের ছেলে হৃদয়, বন্দর থানাধীন ইটেরপুল এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে তালিফ হোসেন, বন্দর থানাধীন হরিপুর সিড়ি ব্রীজ এলাকার ইব্রাহীমের ছেলে মোঃ রাজু আহম্মেদ ও ওলিপুরা নয়াবাজার এলাকার ইব্রাহীমের ছেলে মোঃ ফারুক।
র্যাব আরো জানায়, এই চক্রটি গত ১ এপ্রিল গভীর রাতে সোনারগাঁ থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব আলম এর পরিবারকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করেছিল। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৩টি ককটেল, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি চাপাতি, ২টি ছোড়া, ২টি লোহার রড, ৬টি টর্চ লাইট ও ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও অধ্যাপক মাহবুব আলম এর নিকট হতে ডাকাতিকৃত তার ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি পরষ্পর যোগসাজশে পূর্ব-পরিকল্পনামাফিক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়ীসমূহকে টার্গেট করে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। গভীর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার বিভিন্ন নির্জন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে চলন্ত গাড়ীর গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা করে এবং ধারালো অস্ত্র প্রদর্শণ করে চলাচলরত যাত্রীসাধারণদের ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি ও সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করে ডাকাতি শেষে সিএনজি/মোটরসাইকেলযোগে দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতিকারী এই ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করতে গিয়ে কখনও কখনও জনসাধারণকে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাংচুরসহ গুরুতর জখম এমনকি প্রাণনাশের মতো ঘটনাও ঘটিয়ে থাকে। দীর্ঘদিন দিন ধরে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকায় এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন নির্জন স্থানে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল।