সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বেশকজন প্রভাবশালী রাজনীতিকদের ভুমিকা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন ওঠেছে। যেখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু।
স্থানীয়দের সূত্রে, যুগ যুগ ধরে সোনারগাঁও উপজেলায় আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রণ ও নেতৃত্ব দিয়ে আসছে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের নেতারা। এখানেই আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী পরিবার ঐতিহ্যবাহী হাসনাত পরিবারের উৎপত্তি। একই সঙ্গে জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের আভাসস্থলও মোগরাপাড়ায়। কিন্তু সেইসব নেতাদের দেখা মিলছেনা দলটির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাহলে কি তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শেখ হাসিনার নৌকা ডুবানোর মিশনে নেমেছেন? তারা কি ব্যক্তিস্বার্থে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে অমান্য করবেন?
যদিও ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া কিছুটা সে বিষয়ে সন্দেহ বাড়িয়েছে তার বক্তব্যে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে তিনি হাসনাত পরিবারকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, আপনারা নিজেদেরকে আওয়ামী পরিবার দাবি করেন, আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিবার দাবি করেন, কিন্তু নৌকা না পেলেই নৌকার বিরোধীতা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হোন।
স্থানীয়রা আরো জানান, প্রয়াত নেতা সাজেদ আলী মোক্তার, প্রয়াত এমপি মোবারক হোসেনের মত জনপ্রিয় ব্যক্তিদের জন্মস্থানও এই মোগরাপাড়া ইউনিয়ন। এখান থেকে পুরো উপজেলার নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রয়াত আবুল হাসনাত ও প্রয়াত মোশারফ হোসেনও। সেই মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এইচএম মাসুদ দুলাল, আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন যিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ছিলেন, প্রয়াত মোবারক হোসেনের পুত্র আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দ্বীপ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান রবিনের মত রাজনীতিকগণ।
একটি ইউনিয়ন যেখানে এত্তসব প্রভাবশালী নেতার ইউনিয়নে যদি শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীক ডুবে তাহলে নিঃসন্দেহে তাদের আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন ওঠবে যদি তারা নৌকার বিরোধীতা করেন। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে তারা কোন মুখে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চাইবেন সেটাও বিরাট প্রশ্ন। কায়সার হাসনাতই কিভাবে নৌকা চাইবেন যদি তার বাড়ির ইউনিয়নে নৌকা ডুবে? নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে এখনো দেখা মিলেনি কায়সার হাসনাত সহ বাকিদের। যেথানে এইচএম মাসুদ দুলালকে নৌকার পক্ষে পুরোদমে কাজ করতে দেখা গেছে এবং এরি মাঝে দু’একবার নৌকার পক্ষে নেমেছেন রফিকুল ইসলাম নান্নুও। যদিও স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ রয়েছে নান্নু আদতে নৌকার পক্ষে কিনা। অনেকেই আশা দেখছেন নির্বাচনের শেষ দিক নাগাদ এসব নেতারা ঠিকি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে মান্য করে নৌকার পক্ষেই ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন এবং এটা তাদের রাজনৈতিক ভবিষৎের জন্যই করবেন। যদিও দেখার বিষয় তাদের অবস্থান শেষ পর্যন্ত কোনদিকে যায়। তবে স্থানীয় নেতাকর্মী, মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী মাঠ চাঙ্গা করে তুলেছেন নৌকার প্রার্থী সোহাগ রনি।