সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহন আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে অনেকেই যুগের পর যুগ বিনা নির্বাচনে বিনা ভোটে কিংবা কেউ কেউ আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন বলে জানালেন স্থানীয় লোকজন। কারন এখানে নির্বাচনটি হওয়ার কথা ছিলো না। নির্বাচন ঠেকাতে অনেকেই আগে মামলা ঠুকে দেয় একটি পক্ষ যারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন।
পরবর্তীতে হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য আইনি লড়াইয়ে নামেন। কিন্তু এরপরেও ওই পক্ষটি আবারো আদালতে আপিল করে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সোহাগ রনি মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আইনি লড়াই চালিয়ে যান এবং সফল হোন ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যার লড়াইয়ে মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসী ভোট দিতে পারবেন সেই সোহাগ রনি আওয়ামীলীগের নৌক প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। যে কারনে ভোটাররা বলছেন যার জন্য ভোটের অধিকার পেয়েছেন তারা তাকেই ভোট দিবেন। যারা নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিলো এবং নির্বাচন ঠেকিয়ে আজীবন বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো তাদেরকে ভোট দিবেন না।
২৯ মে রবিবার দিনভর মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের ঘরে ঘরে যান হাজী সোহাগ রনি। ওই সময় ষাটোধ্ব এক বৃদ্ধের কাছে সোহাগ রনি ভোট চাইতে গেলে বৃদ্ধ বলেন, ‘আমরা তোমারেই ভোট দিমু, তোমার লইগগাই তো আমরা ভোট দিতে পারমু, যারা আমাগো ভোট ঠেকাইতে চাইছিলো তাগো ভোট দিমু না, তুমি আমাগো ভোটাধিকার ফিরাইয়া আনছো, আমরা তোমারেই ভোট দিমু, তাগো আমরা ৪০ বছর ভোট দিয়া দেখছি, তাগো আর ভোট দিমু না।’
অন্যদিকে নির্বাচনের বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দীর্ঘদিন আইনী জটিলতা নিরসন করে এই নির্বাচনের পথ সুগম করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি। উচ্চ আদালত সহ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও জেলা নির্বাচন অফিসে দীর্ঘ চেষ্টার পর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ঘোষণা করেছে। তাই ১৫ জুন ভোট হবে।
স্থানীয়দের দাবি- নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বানচাল করতে উদ্দেশ্যমুলকভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বার। কয়েক মাস পূর্বে হাজী সোহাগ রনিও গণমাধ্যম কর্মীদের এমনটা জানান।
ওই সময় তিনি গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, সোনারগাঁও পৌরসভার কিছু অংশে মেঘনা ইকোনোমিক জোনের মধ্যে ডুকে যাওয়ায় পৌরসভা একটি মামলা দায়ের করে। সে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন সেই অংশটিকে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাথে সংযুক্ত করে গেজেট করে। কিন্তু সেই অংশটি ৭নং ওয়ার্ডের কাছাকাছি হওয়ায় শিপন সরকার সেই অংশটি ১নং থেকে কেটে ৭নং ওয়ার্ডের সাথে সংযুক্ত করতে অনুরোধ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দায়েরের পর মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন তফসিল থেকে বাদ পড়ে। সেজন্য আমি মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে পুণরায় পৌরসভার অংশটি ৭ নং ওয়ার্ডে সংযুক্ত করে নির্বাচন করার আবেদন জানাই।
সোহাগ রনি আরো জানিয়েছিলেন, সেই আবেদনের পরিপেক্ষিতে প্রশাসন মামলারকৃত অংশটি কেটে ১নং ওয়ার্ডের পরিবর্তে ৭নং ওয়ার্ডে সংযুক্ত করে পুনরায় একটি চিঠি দেন নির্বাচন কমিশন বরাবর। কিন্তু শিপন সরকার ফের ভোট বর্জন করতে হাইকোট থেকে মামলাটি পুণরায় অন্য কোর্টে হস্থান্তর করে পুণরায় নির্বাচনটি স্থগিত করে। ফলে মোগরাপাড়াবাসী পুণরায় নিজেদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
ওই সময় তিনি বলেছিলেন, শিপন সরকার যে অংশটি নিয়ে মামলা দায়ের করেন সে অংশটি যেহেতু সংশোধন করে প্রশাসন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল সেখানে শিপন সরকার উদ্দেশ্যমুলকভাবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমার প্রশ্ন হলো প্রশাসন যেহেতু বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছে সেখানে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমুলকভাবে মামলার পর মামলা দিয়ে মোগরাপাড়াবাসীর ভোটাধিকার হরণ করছে।