সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি রাজাকারদের সার্টিফিকেট দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। তবে তার এমন মন্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, মাহফুজুর রহমান কালাম আওয়ামীলীগের কিছু না, সে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত, তাই সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোনারগাঁ উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সবচেয়ে দূর্বল কমিটি এখন সোনারগাঁয়ে দায়িত্ব পালন করছে। আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর সোনারগাঁওয়ের এই আওয়ামীলীগ এখন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের সার্টিফিকেট দিচ্ছে।
ক্ষোভের সঙ্গে আওয়ামীলীগের এই বর্ষিয়ান নেতা বলেন, মনোয়ারা চৌধুরী নামে উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা পদে এক নারীকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়। অথচ তার রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ ৩৫ বছরে কখনো কোন দিন এই নামে উপজেলা মহিলা সম্পাদিকা ছিলেন বলে জানেন না। এই মনোয়ারা চৌধুরী কোন জীবনে কোন কালে এই পদে ছিলেন এমন প্রশ্ন করে কালাম বলেন, একজন মিথ্যা ব্যক্তির নামে ক্রেস্ট হয়েছে দেখে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে তিনি অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন।
কালাম আরো বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের মোবারক হোসেন উপজেলা অওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সৈয়দ মফিকুর রহমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গঠিত কমিটিতে মহিলা সম্পাদিকা হিসেবে ছিলেন সাবিহার। আর অবুল হাসনাতকে সভাপতি এবং আব্দুল হাইকে সম্পদক করে গঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে মহিলা সম্পাদিকা ছিলেন মিসেস মমতাজ বেগম। এর আগে, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগে কোন দিন কোন কালে কিছু ছিল বলে তার জানা নাই।
কালাম আরও বলেন, আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র দীর্ঘ দিন যাবতই হচ্ছে। এটাও তারই একটা অংশ। এখানে তাদের মূল কমিটি ভেঙ্গে অন্যায় ও অনৈতিকভাবে একটা প্রায়ক কমিটি নাম দেয়া হয়েছে যে কমিটিতে এ সংগঠন চালানোর মতো সর্বনিম্ন কোন যোগাতা কারোর নেই।
তিনি বলেন, তার রাজনৈতিক জীবনে কোন দিন দেখেননি বিএনপি চৌরাস্তায় মশাল মিছিল করে। বর্তমানে বিএনপি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের সাথে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিক হয়। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পরে। আওয়ামী লীগের জন্য হলেও তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে এর চেয়ে বেশি বর্তমান উপজেলা কমিটি থেকে কিছু আশা করা যায়না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন এখন তারা যেটা করছে সেইটা শুধুমাত্র রাজাকারদের সার্টিফিকেট দেয়ার জন্যই এই আওয়ামী লীগটা হচ্ছে বলে তার দাবি।
এরআগে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১০ টায় সোনারগাঁ উপজেলা অওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর উপজেলা অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন।
এদিকে কালামের এমন প্রতিবাদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া অপর এক ভিডিও বার্তায় বলেন, মাহফুজুর রহমান কালাম সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন পদে নাই।তিনি আওয়ামী লীগের কিছুই না। যে কারণে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগে বিভেদ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত। মনোয়ারা চৌধুরীর বিষয়ে তিনি যা বলেছেন সেই সময় কালামের জন্মই হয়নি, রাজনীতি তো দূরের কথা, তিনি কি করে জানবেন কে আওয়ামী লীগ করেছেন আর কে করেননি?