সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে বহিস্কার করেছে বিএনপি। সেই থেকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক দিয়ে চলছে জেলা বিএনপির কার্যক্রম। অনেকটা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহামুদের একক নিয়ন্ত্রণেই চলছে জেলা বিএনপির কার্যক্রম। জেলার প্রতিটি থানা/উপজেলায় কমিটি গঠনের পর নানা বিতর্কে পড়েছে এই কমিটি। যার ফলশ্রুতিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটিও স্থগিত করতে হয়েছে তাদের।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন কমিটি গঠনের দাবি ওঠেছে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে। টানা দুই টার্ম জেলা বিএনপির শীর্ষ পদে অটল রয়েছেন মামুন মাহামুদ। কিন্তু দিনকে দিন জেলা বিএনপির অবস্থান আরো নাজেহাল হতে যাচ্ছে। যেখানে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা কেন্দ্রীয় বিএনপির, সেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়েছে। ওয়ানম্যান শো নেতা মনিরুল ইসলাম রবি যখন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক তখন জেলা বিএনপির কি দশা সেটা অনুমেয়।
মামুন মাহামুদের আদিনিবাসও নারায়ণগঞ্জে না হওয়ার দূরণ শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারছেন না তিনি। আগামী ২০২৩ সালে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিকে ঢেলে সাঁজিয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে হলে রাজপথের তৃণমুল থেকে ওঠে আসা নেতাদের হাতে প্রয়োজন জেলা বিএনপির নেতৃত্ব, যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবেন এবং যাদের পেছণে হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছে।
নেতাকর্মীদের মাঝে দাবি ওঠেছে- ওয়ানম্যান শো নেতাদের মাধ্যমে মঞ্চ সাঁজানো নেতাদের নেতৃত্ব বাদ দিয়ে রাজপথের তৃণমূল নেতাদের হাতে নেতৃত্ব, যাদের মধ্যে অন্যতম মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এর আগের কমিটিতে রাজীব ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক।
ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। এর আগেই হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য, পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকও হোন। নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপিও ছিলেন তিনি। ছিলেন কলেজ ছাত্রদলের সভাপতিও। সেই থেকে পুরো জেলা জুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী সৃষ্টি করেছেন রাজীব। নারায়ণগঞ্জ জেলার শেষপ্রান্ত আড়াইহাজারের কালাপাহারিয়া থেকে আলীরটেক গঞ্জকুমারিয়া এলাকা পর্যন্ত মাসুকুল ইসলাম রাজীবের কর্মী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন।
২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে কঠিন সময়েও মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল বিশাল শোডাউনে কর্মসূচি পালনের নজির রেখেছেন। নগরীর মিশনপাড়া থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলে বের হলে তার নেতাকর্মীরা সরকারি দলীয় লোকজনের দ্বারা গুলিবর্ষণের শিকারও হয়েছিলেন। মাসের পর মাস একাধিকবার জেল খেটেছেন রাজীব।
নির্বাচন আসলেই নির্বাচনের বছর খানিক আগে থেকেই বাড়িঘর সন্তান সংসার ছাড়া আত্মাগোপনে থেকেছেন। তারি মাঝে বাড়ি ফেরার আগেই গ্রেপ্তার হয়ে ভোগ করেছেন কারাগার। রাজপথে আন্দোলনের কারনে ২০১৩/২০১৪ সালে নগরীতে বিএনপির রাজনীতিতে চাওর ছিলো রাজীবকে পেলেই গুলি করা হতে পারে। বাড়িতে অভিযানে ছোট ছোট অবুঝ সন্তানদের সামনে থেকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছেন রাজীবকে।
মোটকথা রাজপথে ও আন্দোলনে তার ত্যাগের সীমা অপরিসীম। একই সঙ্গে তার বিপুল সংখ্যক কর্মী রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে। ব্যক্তিত্ব নেতৃত্বেও মাসুকুল ইসলাম রাজীব সুদর্শন। বক্তৃতায় নেতাকর্মীদের চরমভাবে আকৃষ্ট করতে পারেন তিনি। ঘন্টার পর ঘন্টা রাজনৈতিক বক্তব্যে ক্লান্তি আসেনা তার। মাসুকুল ইসলাম রাজীবের মত কর্মীবান্ধব নেতা নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বর্তমান কমিটিতে খুঁজে পাওয়া দূরহ। ফলে এমন পরিস্থিতিতে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব রাজীবের হাতে ওঠার দাবি জোরালো।