সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সারাদেশে কিংবা নারায়ণগঞ্জে যখন বিএনপির রাজনীতি কঠিন পরিস্থিতিতে তখনও নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীদের রাজনীতি ছিলো তুঙ্গে। সরকারি দল আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের রাজনীতির চেয়ে বিএনপির আইনজীবীদের রাজনীতি ছিলো একটু বেশি আলোচনায়। নিজ দলের নেতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হোক কিংবা সরকারি দলের বিরুদ্ধেই হোক সর্বত্র আলোচনায় ছিলেন বিএনপির আইনজীবীরা। যার ফলশ্রুতিতে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবী সমর্থক বেশি হিসেবেও দাবি করা হতো। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম দুই টার্মে সমানতালে লড়াই করে গেছেন বিএনপির আইনজীবীরা। কিন্তু বর্তমানে আদালতপাড়ায় বিএনপির সেই রাজনৈতিক জৌলুস হারিয়ে গেছে নানা কারনে।
আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করলে এর কারন হিসেবে অনেকেই দাবি করেন- আদালতপাড়ায় বিএনপির একটি সক্রিয় পক্ষ রাজনীতি থেকে নীরব হয়ে গেছেন, যারা এক সময় তুমুল আলোচনায় ছিলেন রাজনীতিতে। গণমাধ্যম কিংবা আদালতপাড়ায় ছিলেন ব্যাপক আলোচনায়। দলীয় কর্মসূচি কিংবা নিজেরাই ডোনেট করে দলের পক্ষে ছোট ছোট কর্মসূচি পালন করে দলকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। এসব কারনে সিনিয়র আইনজীবীদের সুদৃষ্টিতেও পড়েছিলেন তারা। দলের সক্রিয় কর্মকান্ডের কারনে পরিচিতিও আকাশচুম্ভি হয়ে ওঠে। কিন্তু নানা রাজনৈতিক কারনে ধীরে ধীরে তারা একাংশের সিনিয়র আইনজীবীদের কাছে বিরক্তির কারন হয়ে যায়।
কোর্টপাড়া সুত্রে, নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মুল কারিগর অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, যিনি গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। কয়েক বছর পুর্ব পর্যন্তও আদালতপাড়ায় বিএনপির রাজনীতির একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। বছর দেড়েক পূর্বে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠনে নির্বাচনের পর তৈমূর আলম খন্দকারের অবস্থান কোর্টপাড়ার রাজনীতি থেকে নড়বড়ে হয়ে যায়। এর আগে থেকেই তৈমূরের প্রভাব কমতে থাকে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হলেও সিটি নির্বাচন ও দল থেকে বহিস্কারের পর কোর্টপাড়া থেকে তৈমুর আলমের অবস্থান আরো নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ফলে তার বেশ কিছু সমর্থকও নীরব অবস্থান নিয়েছেন।
তবে বিএনপির আইনজীবীরা মনে করছেন- দল ক্ষমতায় নেই দীর্ঘদিন। রাজনীতিতে বেশি সময় দিতে গিয়ে পেশাগত সমস্যায় পড়তে হচ্ছিলো বিএনপির আইনজীবীদের। ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখলেও সেরকম আশা দেখছেন না তারা। যার ফলে নিজ নিজ পেশা নিয়েই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বেশি। যে কারনে আগের মত কোর্টপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীরা আলোচনাতেও নেই, সমালোচনাতেও নেই। সান নারায়ণগঞ্জকে অনেকে বলছেন- কেন্দ্রীয় দলের সবুজ সংকেত পেলে বিএনপির সকল আইনজীবীরাই পূর্বের চেয়ে বেশি গতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠবেন কোর্টপাড়ার রাজনীতিতে। বিএনপির আইনজীবীরা বিরতি নিচ্ছেন। যদিও আবার অনেকে মনে করেন বর্তমান ফোরামের যারা নেতৃত্বে রয়েছেন তারা সেভাবে সক্রিয়তা দেখাতে পারছেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও পেড়ে ওঠছেনা বিএনপি। এসব কারনে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগীতা কিংবা কাঁদা ছোড়াছুড়িও করছেনা অথবা সরকারি দলের বিরুদ্ধেও ওঠছেনা বিএনপির আইনজীবীরা। এসব কারনে বিএনপির আইনজীবীদের রাজনীতির চেয়ে আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের রাজনীতি এখন বেশি আলোচনায়।