সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বরাবরেই মতই নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে এখনি আলোচনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসনটি। ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে ছাড় দিয়েছে এই আসনটি। সেই থেকে এখানে এমপি হয়ে আসছেন জাতীয়পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
২০০৮ সালে সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে নৌকা নিয়ে এমপি হয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। ২০২৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা কায়সার হাসনাতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখলেও তার সামনে রয়েছে কঠিন হিসেব নিকেশ। কায়সার হাসনাত আবারো এমপি হবেন এমনটা নেতাকর্মীদের মাঝে স্বপ্ন জাগালেও দিনকে দিনকে সেই সম্ভাবনা কমে আসছে। প্রথমত এখানে জাতীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পর নৌকার প্রার্থী আনতে হবে এবং কায়সার হাসনাতই নৌকা পাবেন সেটা হলফ করে বলা কঠিন হয়ে গেছে।
এর কারন হিসেবে স্থানীয় নেতারা বলছেন- ২০১৪ সালে এই আসনটি জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামীলীগ। একইভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এখানে জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যান কায়সার হাসনাত। নানা নাটকীয়তার পর কয়েক ঘন্টা পূর্বে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। জাতীয় রাজনীতিতে দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঝে বিরুপ প্রভাব ফেলে।
এবার গত ১৬ জুন মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের জন্য তাকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর অভিযোগ দেন প্রার্থী হাজী সোহাগ রনি। নির্বাচনের পূর্বে ও পরে কায়সার হাসনাতের আচরণ ও ভুমিকায় স্পষ্ট হওয়া যায় তিনি নৌকার পক্ষে ছিলেন কিনা। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচনে তার জন্য বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে মহাজোট বহাল থাকলে এখানে আবারো মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এখানে কায়সার হাসনাত নৌকার প্রার্থী হতে হলে অনেকগুলো ‘যদি’ এর সমাধান হতে হবে। যেমন প্রথমে যদি মহাজোট না থাকে, যদি মহাজোট থাকলেও নৌকার প্রার্থী দেয়, যদি অন্য কেউ নৌকার মনোনিত না হোন তখনি কায়সার হাসনাত নৌকার মনোনিত হতে পারেন। কিন্তু গত নির্বাচনে এখান থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১৬ জন। এবার সেই সংখ্যা আরো বাড়তেও পারে।
যদিও একটা সময় নেতাকর্মীরা মনে করতেন, এখানে মহাজোটের প্রার্থী দেয়া না হলে কায়সার হাসনাতই নৌকার প্রার্থী মনোনিত হবেন। কিন্তু সেই সম্ভাবনা এখন অনেকটাই কমে আসছে। কারন সোনারগাঁও উপজেলায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বৃহত্তর অংশ জুড়ে রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এএইচএম মাসুদ দুলাল ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। এদিকে ধীরে ধীরে সোনারগাঁওয়ের রাজনৈতিক মাঠ ঘুছানোর কাজ করে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দীপক কুমার বনিক দিপুও। ফলে এখানে যদি নৌকার প্রার্থী দেয়াও হয়, তাহলেও আগামী জাতীয় নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগের এই তিন নেতা। কায়সার হাসনাতের সঙ্গে তারাও নৌকার লড়াইয়ে থাকছেন সামনের সারিতে।