সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আবারো ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে এপিলেট ডিভিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার নিরীহ মানুষের ভূমি রক্ষায় তাদের পাশে দাড়িয়েছেন। নিরীহ মানুষের পক্ষে একাই তিনি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াচ্ছেন। এসব অসহায় নিরীহ মানুষদের মাঝে সরকারি দলের আত্মীয় স্বজন ও সরকারি দলের সমর্থিত লোকজনও রয়েছেন যাদের জমি বসত ভিটা জোর করে বালি দিয়ে ভরে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যূরা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বেশকটি গ্রামের ৫ হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজার হাতে এই লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগীদের নিয়ে দাখিল করেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর এই লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়েও এই অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়।
ইষ্ট ওয়েট প্রপার্টি ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিডেট, বসুন্ধরা সাইনিয়া সার্ভিসেস লিমিডেট ও আশালয় হাউজিং এন্ড ডেভেলপার্স লিমিডেট নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই ৫ হাজার মানুষের জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়।
এসব দপ্তরে অভিযোগ দায়েয়ের সময় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এসব ভূমিদস্যূ প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের জমি বসত ভিটা জোরপূর্বক দখল করছে। জমি কিনে একটি আর বালি দিয়ে ভরে দশটি জমি। কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই তারা নিরীহ মানুষের জমি দখল করছে। যদি এভাবে নিরীহ মানুষের জমি বসত ভিটে ভূমিদস্যূরা জোর করে দখল করে নেয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলাধীন রূপগঞ্জ ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ ও মোগলান মৌজায় অবস্থিত মধূখালী গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস সহ ৬টি সামাজিক, ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুকুর, ফসলী জমিসহ মানুষ চলাচলের পাকা রাস্তাসহ হাজারের অধিক বসত ঘর রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ একটি ভূমিদস্যু চক্র এই গ্রামের জমিতে জোরপূর্বক বালি ফেলে দখলে নেয়ার জন্য ড্রেজার পাইপ স্থাপন করেছে।
তারা আরও জানায়- শুধু তাই নয়, জমি ক্রয় না করে জোরপূর্বক বালি ফেলে ভরাটের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে আমরা গ্রামবাসি সঙ্কিত ও আতঙ্কিত। আমাদের বিতারিত করে এ গ্রামটি দখল করে ভূমিদস্যুরা আবাসন প্রকল্প করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যান বাড়ী বাজারের দক্ষিণ পার্শে রাস্তার উপরে (ডেমড়া-কালিগঞ্জ সড়কের উপর) ড্রেজার পাইপ বসিয়ে বালি দ্বারা এলাকাটি ভরাটের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে। ড্রেজার পাইপ বসানোর জন্য ভূমিদস্যুরা জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই।
ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখেন- ফসলী জমি ভরাট করে কোন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। ভূমিদস্যুরা বালু দ্বারা উক্ত গ্রাম এলাকা ভর্তি করে আবাসন প্রকল্প করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই। শুধুমাত্র প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করে স্থানীয় অধিবাসী কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে। এ মর্মে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতোপূর্বে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু ভূমিদস্যুদের তৎপরতা বন্ধ হয় নাই। গ্রামবাসীগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিদস্যুদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ওই সময় নিরীহ জমির মালিক আব্দুল মান্নান, আব্দুর রউফ, সিরাজ, আনোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, শহিফুল ইসলাম, বিলকিস বেগম, হাসিনা, বাদল মিয়া, মোক্তার হোসেন, গোলজার হোসেন, আলী আকবর সহ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যওরাও উপস্থিত ছিলেন।