সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর গঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কমিটিতে আইনজীবীদের বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ২০৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১৯ জন আইনজীবীকে নেতৃত্বে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে। এসব আইনজীবীরা আদালতপাড়ার রাজনীতির বাহিরেও বিভিন্ন এলাকায় রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়। অনেক আইনজীবীরা সমাজে বেশ গুরুত্ব দিয়েই প্রতিষ্ঠিত। বিএনপির নেতাকর্মীরা শত শত মামলায় আইনজীবীদের আইনী সহায়তাও বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখেছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
জানাগেছে, গত ১৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটিতে আংশিক কমিটির সকলকেই স্বপদে রাখা হয়েছে। যেখানে সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সেক্রেটারি পদে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বয়ক। অপর সহ-সভাপতি পারভেজ আহমেদ। তিনিও একজন আইনজীবী। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলর তার সনদ আজীবনের জন্য বাতিল করেছে। তিনি নিজেকে ব্যারিস্টার দাবি করেন।
কমিটিতে আইন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা। তিনি আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন।
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হাসান খোকা, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির, অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হক আলমগীর ও অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম। এদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদ জাকির নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত নির্বাচনে তিনি সেক্রেটারি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। আদালতপাড়ায় রাজনীতিতে তিনি বেশ সক্রিয়। একইভাবে মাহামুদুল হক আলমগীর গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়ন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। আবদুর রহিম সোনারগাঁও বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলাগুলো পরিচালনা করে থাকেন।
কমিটিতে নির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টু, অ্যাডভোকেট আল-আমিন সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোজ্জামেল মল্লিক শিপলু, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট গিয়াসউদ্দীন, অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট মামুন মাহামুদ, অ্যাডভোকেট গোলজার হোসেন, অ্যাডভোকেট রেজাউল হক, অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান ও অ্যাডভোকেট শাহআলম মানিক।
এসব সদস্যদের মাঝে বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় সকলেই সক্রিয়। বেশকজন আদালতপাড়ার রাজনীতিতেও সক্রিয়। আজিজুল হক হান্টু জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ পদেও রয়েছেন। মোজ্জামেল মল্লিক শিপলুও রাজনীতিতে সক্রিয়। আল-আমিন সিদ্দিকী ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে তিনি বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। বাকিরাও বেশ সক্রিয় রাজনীতিতে। পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন করতে গিয়ে মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের আইনি লড়াইয়েও এরা সক্রিয় থাকেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে আইনজীবীদের গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’কে বলেন, এক সময় আইনজীবী ও শিক্ষক সমাজই রাজনীতিতে বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসায়ী ও সুবিধাবাদীদের কারনে শিক্ষিত সমাজ রাজনীতি থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। যে কারনে আমরা জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আইনজীবী, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব দিয়েছি। তা ছাড়া এসব শিক্ষিক সমাজের লোকজন সমাজেও বেশ গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায় এক যুগ ধরে আন্দোলন করতে গিয়ে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী মামলায় জর্জরিত। এসব মামলায় আমাদের আইনী সহযোগীতা করে আসছেন আইনজীবীরা। আইনী সাপোর্টটাও বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের কাছ থেকে পাচ্ছেন। আইনজীবীরা সচেতন নাগরিক। এসব বিষয় বিবেচনা করেই বেশকজন আইনজীবীকে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে।