সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর সালাম সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল। তিনি নিজেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে পদত্যাগের দাবি করে আব্দুস সালাম সম্পর্কে বলেন, সালাম কিয়ের নেতা, তারে দুই আনা দিয়েও দাম দেই না। তারে দুই আনা দিয়ে গুনায় ধরিনা। উয়ে মুন্সিগঞ্জের কিয়ের নেতা, ওরে দায়িত্ব দিছে এখন চুরি কইরা ধান্দাবাজি কইরা খাইতাছে, ও কেন্দ্রের কিয়ের নেতা, আমরা জনগণের নেতা। সালামকে নারায়ণগঞ্জ অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম। এই সালাম যদি নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে তাহলে চামড়া তুলে নিবো।
১৮ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর মাসদাইর এলাকায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের বাসায় প্রয়াত মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু ও যুবদল কর্মী নিহত শাওনের আত্মার মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে এ ধরণের মন্তব্য করেন আতাউর রহমান মুকুল।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম ভাইয়ের চামড়া তুলে নিবে এবং নারায়ণগঞ্জে উনাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছেন যারা, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, শুধু তোমরা না, সাথে তোমরা যাদের এজেন্ট তাদেরকেও সাথে নিয়ে নিও, তারপরেও যদি উনার একটি পশম স্পর্শ করতে পারো, তাহলে জাতীয়তাবাদের নারায়ণগঞ্জের সৈনিকেরা হাতে চুরি পরে এই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে যাবে।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ই সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে অধিষ্ট হোন আতাউর রহমান মুকুল, যিনি একসময় বন্দর থানা বিএনপির বিদ্রোহী কমিটির স্বঘোষিত সভাপতি হিসেবে দাবি করে আসছিলেন। দীর্ঘদিন যাবত বিএনপি নেতা দাবি করে তিনি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মঞ্চে উঠে রাজনীতি করেছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান এর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনে কাজ করেছেন। এমনকি ধানের শীষের প্রতিকার প্রার্থী অভিযোগ করেছিলেন ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে মারধর করে আতাউর রহমান মুকুল বের করে দিয়েছেন।
মুকুল ও তার অনুগামী সুলতানের বাধার কারনে জাতীয় নির্বাচনের সময় বন্দরের মদনগঞ্জ সিরাজউদ্দৌলা মাঠে সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে অন্যত্র মাঠে সমাবেশ করতে হয়েছিল বিএনপিকে। সেই আতাউর রহমান মুকুল এবার কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সালামকে নারায়ণগঞ্জে অবাঞ্চিত ঘোষণার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। একইসঙ্গে আব্দুস সালামের চামড়া তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরো জানা গেছে, ১৮ই সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির প্রথম বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয় নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাড়া শহীদ মিনারে। কিন্তু এই কর্মসূচিকে বানচাল করার লক্ষ্যে বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার হুট করেই একইদিন একই সময়ে তার নিজ বাসভবন মাসদাইর এলাকায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন, যেখানে বিএনপি নেতা কর্মীদের নিয়ে নানা ধরনের কটুক্তি করে বক্তব্য রাখেন বক্তারা। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি আওয়ামী লীগ পরিবারের পক্ষে নানা গুণকীর্তন ক্ষমতার লোভে দৃষ্টতা দেখিয়েছিলেন তৈমুর আলম। যে কারনে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।