সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সভাপতি সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের নাম ঘোষণা করা হলেও ২৩ অক্টোবর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ নাম ঘোষণা করা হয়নি।
সভাপতি পদে আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে বহাল ঘোষণা করা হলেও কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়নি। যদিও জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর নাম ঠিকিই ঘোষিত হয়েছিলো। অনেকেই মনে করছেন- মেয়র আইভী বিরোধী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানে অঙ্গুলী ইশারায় হাই-বাদল স্বপদে বহাল রয়েছেন। সে কারনেই সিনিয়র সহ-সভাপতি পদটি ঘোষণা করা হয়নি। ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে হাই ও বাদলের নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মেয়র আইভী ও তার অনুগত নেতারা স্বপদে ফিরতে পারবেন কিনা।
জানাগেছে, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের তাৎকালীন প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সিনিয়র সহ- সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ। এর ১৩ মাস পর তিন নেতাকে বহাল রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আইভী অনুগামী হিসেবে পরিচিতি জাহাঙ্গীর আলমকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মিজানুর রহমান বাচ্চুকে সহ-সভাপতি ও আবু সুফিয়ানকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাখা হয়। এ ছাড়াও আইভী অনুগামী আরো বেশকজন নেতার নাম পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়। কিন্তু এবার জেলা কমিটির সম্মেলনে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হাই ও বাদল কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রে জমা দিবে। এতে বুঝা যায় হাই ও বাদলের তৈরি করা কমিটিতে থাকছেনা মেয়র আইভী সহ তার অনুগতদের নাম। ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে মেয়র আইভী ও তার অনুগত নেতাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে হবে সেটা প্রায় অনুমেয়। নতুবা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ মিলছেনা তাদের।
সূত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। প্রয়াত অধ্যাপিকা নাজমা রহমান সভাপতি ও এমপি শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এর পর ২০০২ সালের ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরামকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্র থেকে ৬১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়। পরে আহ্বায়ক এস এম আকরাম পদত্যাগ করে যুক্ত হয়ে পড়েছেন নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে। পরে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় যুগ্ম-আহ্বায়ক প্রযাত মফিজুল ইসলামকে। ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মফিজুল ইসলাম মারা যান।
সবশেষ ২৩ অক্টোবর রবিবার জেলা কমিটির সম্মেলনে আগামী তিন বছরের জন্য হাই ও বাদলের নাম ঘোষণা করেন প্রধান অতিথির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।