সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও যুবলীগ। রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে কিংবা দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখে এই দুটি সংগঠনের নেতারা। এর মধ্যে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর সেই বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে গঠিত নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের অবস্থা নড়াদশা। এর মধ্যে শহর যুবলীগের কমিটি এখনও মহানগরীতেই উন্নীতি করা হয়নি। নিজেদের সংগঠন গুছিয়ে নিলেও যুবলীগের কার্যক্রম অনেকটা অস্তিত্ব সংকটের দিকেই পড়েছে।
জানাগেছে, গত ৩১মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। মহানগর যুবদলে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও জেলা যুবদলেও ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুটি সংগঠনই ইতিমধ্যে তাদের নতুন কমিটির পরিচিতি সভাও করেছেন। মহানগর কমিটির পরিচিতি সভা হয় নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরে মজলুম মিলনায়তনে। জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির পরিচিত সভা হয় রূপগঞ্জের কাঞ্চনে।
এদিকে আরও জানাগেছে, গত বছরের ১৯ অক্টোবর একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় যুবদল। যেখানে সভাপতি করা হয় শহিদুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দীন চৌধুরী সালামত, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম আমিরুল ইসলাম ইমন, হারুন অর রশিদ মিঠু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন।
এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহাল রেখে ১৯জনকে সহ-সভাপতি, ১০জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৩ জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক, ৯ জনকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন কোষাধ্যক্ষ ছাড়াও আরও ৫ জনকে সহ-কোষাধ্যক্ষ পদে রাখা হয়েছে। একজন প্রচার সম্পাদক ও সহ-প্রচার সম্পাদক আরও ৪ জন। সাধারণ সদস্য পদে রাখা হয়েছে ৭৩ জন যুবদল নেতাকে নিয়ে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত আবদুল কাদির ও সেক্রেটারি নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল। কমিটিতে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরে গেলে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রাখা হয় জাকিরুল আলম হেলালকে। এই কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন শাহনিজাম। এই কমিটি বিএনপি জামাত সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করেছিল। ইতিমধ্যে আবদুল কাদির জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও শহীদ বাদল জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে জাকিরুল আলম হেলাল মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহনিজাম মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। যুবলীগের এসব নেতারা মুলদলে চলে গেলেও জেলা যুবলীগের কমিটি গঠনের কোন প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছেনা নারায়ণগঞ্জে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। গত ৩১ মার্চ এই কমিটির অনুমোদন করা হলেও ৫ এপ্রিল তা মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়। ওই দিন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের এই পূর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আংশিক কমিটির ৫ জন স্বপদে বহাল রয়েছেন। দীর্ঘ এই কমিটিতে ২৫ জনকে করা হয়েছে সহ-সভাপতি! ১৮ জন রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে এবং ৭জন সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন ৫ জন।
কমিটির সভাপতি পদে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি- মনোয়ার হোসেন শোখন, সহ-সভাপতি- সানোয়ার হোসেন, রানা মজিব, আনোয়ার হোসেন আনু, আকতার হোসেন খোকন শাহ, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, জুয়েল প্রধান, জুয়েল রানা, মনিরুল ইসলাম মনু, আমির হোসেন, মীর বিল্লাল হোসেন, ইছালউদ্দিন ইশা, রিটন দে, সরকার মুজিব, ইউনুছ খান বিপ্লব, নাজমুল কবীর নাহিদ, নাজমুল হক রানা, আহম্মদ আলী বন্দর থানা, জানে আলম দুলাল, আকতার হোসেন সবুজ, ফয়েজ আহম্মেদ, আব্দুর রহমান, গোলাম কিবরিয়া, হারুনুর রশীদ লিটন, শেখ মোঃ সেলিম।
সাধারণ সম্পাদক পদে মন্তাজউদ্দিন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- সাগর প্রধান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আলী নওশাদ তুষার, ইকবাল হোসেন, নজরুল ইসলাম, আল-আমিন খান, শেখ রুহুল আমিন রাহুল, মাহাবুব হাসান জুলহাস, মনিরুজ্জামান পিন্টু, ফিরোজ আহম্মদ, নুর এলাহী সোহাগ, কাজী সোহাগ, এমএএম সাগর, মঞ্জুরুল আলম মুসা, মোকতার ভূইয়া, সোহেল খান বাবু, মিজানুর রহমান, শেখ মোহাম্মদ অপু ও আক্তার হোসেন অপু, সহ-সাধারণ সম্পাদক- সাইফুদ্দিন মাহমুদ ফয়সাল, শহীদুল ইসলাম, সাইফুর রহমান প্রধান, জাকির হোসেন সেন্টু, সাইদুর রহমান বাবু, আবুল হোসেন রিপন ও ফয়সাল মাহমুদ।
এ ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রশিদুর রহমান রশু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ, আরমান হোসেন, নুর এজাজ আহম্মেদ, কাওসার আহম্মেদ, সাহেব উল্লাহ রোমান-ওয়ার্ড, কোষাধ্যক্ষ পদে জাহাঙ্গীর প্রধান, সহ-কোষাধ্যক্ষ পদে জাহাঙ্গীর হোসেন জাহিদ, রুবেল হোসেন, প্রচার সম্পাদক পদে রাসেল আহম্মেদ মনির, সহ-প্রচার সম্পাদক- আক্তার হোসেন জিহাদ, জাকির হোসেন মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক- শওকত খন্দকার, সহ-দপ্তর সম্পাদক জাহিদ খন্দকার, সোহেল মাহমুদ, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক- মোস্তাফিজুর রহমান বাহার, সহ-সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক এরশাদ আলী, সাদ্দাম হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম শিপলু, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিন মাসুম সহ ২০১ সদস্যের কমিটি।
অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সভাপতি পদে রয়েছেন শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু ও সেক্রেটারি পদে রয়েছেন আলী আহম্মদ রেজা উজ্জল। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন আমজাদ হোসেন। তবে বর্তমানে সাজনু ও উজ্জলকে ছাড়া এই কমিটির অনেক নেতাদের চিনেন না বর্তমানে যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় নেতাকর্মীরা। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে উন্নীতি হলেও এখানে মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠন করতে পারেনি যুবলীগ নেতারা। এ বিষয়েও কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা। এর আগে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও কমিটি গঠন এগুতে পারেনি বিরোধের কারনে। কারন সভাপতি সাজনু রাজনীতি করেন এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে অপরদিকে উজ্জল রাজনীতি করেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা.সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে। ফলে মহানগরীতে এখন সেই শহর যুবলীগের কমিটি দিয়েই চলছে রাজনীতি। যদিও দুটি ভাগ থাকলেও যুবলীগের শোডাউন দেখা যায় বেশ বড় সরোই। যেমনটা এই কমিটির নেতারা বিএনপি জামাত সরকার আমলে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ভুমিকা রেখেছিলেন।