সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপির রাজনীতিতে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন ছিলেন আব্দুল হাই রাজু। কিন্তু জেলা বিএনপির গত কয়েকটি কমিটি গঠনে শীর্ষ পদ ভাগিয়ে নেয়া আব্দুল হাই রাজু এখন গিয়াস থেকে দুরে। কিন্তু এবার সেই গিয়াসের হাতে ওঠেছে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব, যেখানে জেলা কমিটি নেই রাজু। জেলা বিএনপির আগের কমিটিতে ছিলেন যুগ্ম আহ্বাক।
যদিও এর আগে আব্দুল হাই রাজুকে আহ্বায়ক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই বাতিল করতে হয়েছে এবং সম্মেলনে গিয়াসের লোকজন হামলাও চালিয়েছিলো। সেই রাজু এবার গিয়াসের গুডবুকে নেই এবং আছে ব্লাক লিস্টে- এমন মন্তব্য করেছেন নেতাকর্মীরা। তবে অতীতের রাজনীতিতে পদবঞ্চিত ও এক সময়কার মাঠ কাঁপানো নেতারা ফিরতে যাচ্ছেন বিএনপির সামনের সারির রাজনীতিতে। যারা গিয়াসের সঙ্গে রাজপথে নামতে যাচ্ছেন ফ্রন্ট লাইনে।
সূত্রে, গত ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটিতে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রযেছেন অধ্যাপক মামুন মাহামুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক পদে মনিরুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম টিটু, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, যুগ্ম আহবায়ক লুৎফর রহমান খোকা, যুগ্ম আহবায়ক মোশারফ হোসেন ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ জুয়েল আহমেদ।
কমিটিতে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে যে, জেলা বিএনপির আওতাধীন কমিটির অনুমোদনের ক্ষেত্রে আহ্বায়ক, ১নং যুগ্ম অহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে। কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহামুদ আগের কমিটির সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি ছিলেন আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক।
এদিকে গিয়াসউদ্দীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হওয়ার পর রীতিমত গিয়াসের দিকে হুমরি খেয়ে পড়েছেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। নিয়মিত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গিয়াসের বাড়িতে নেতাকর্মীদের আনাগোনা ও ভীড় জমছে। এক সময় যারা বিএনপির রাজনীতিতে রাজপথে সক্রিয় অবস্থানে ছিলেন সেইসব নেতাকর্মীরাও সক্রিয় হচ্ছেন। যারা গিয়াসের লোক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় বিগত দেড় যুগেও বিএনপির কোনো কমিটিতে ঠাই পাননি সেইসব নেতারাও এবার সক্রিয় হচ্ছেন। আশা দেখছেন দেড় যুগ পরেও হলেও দলের মুল্যায়ণ পাবেন।
যাদের মধ্যে অন্যতম ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম। কোনো পদে না থাকলেও রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। বয়সের কারনে নেতৃত্ব না পেলেও গিয়াসের ভরসায় রাজনীতিতে থাকবেন সম্মানের জায়গায় সেটা বলা যায়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল জেলা বিএনপির বিগত কমিটিতে সদস্য পদে থাকলেও মুলস্রোতে আসতে পারেনি বিএনপি নেতা মাজেদুল ইসলাম। তবে এবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে এই দুজনের কাউকে দেখা যেতে পারে।
বাদ যাচ্ছেন না গিয়াসউদ্দীনের অন্যতম ঘনিষ্ঠজন বিএনপি ইমাম হোসেন বাদল, কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের মত নেতারাও। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন তারা এটা হলফ করেই বলা যায়। খোকনকে সক্রিয়তা কম দেখা গেলেও বিএনপির রাজনীতিতে সরব ছিলেন বাদল ও ইকবাল।
অন্যদিকে ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা শহীদুল্লাহ ও মইনুল হাসান রতনের সম্ভাবনা জেগেছে দীর্ঘদিন পর। ফতুল্লায় বিএনপি নেতা শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমের গ্যাড়াকলে পড়েও রাজনীতিতে সরব থেকেছেন রতন। তবে এবার ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতেও তাদের দেখা যেতে পারে সামনের সারির রাজনীতিতে।