দেশের দূরাবস্থার জন্য সরকার ও তার এমপি-মন্ত্রীরা দায়ী: সাখাওয়াত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের অতিষ্ট দেশের সাধারণ মানুষ। চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। আর এসব কিছুর মূলে রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি। দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরা।দেশের আজকের দুরাবস্থার জন্য এই সরকার ও তার এমপি-মন্ত্রীরা দায়ী। এখন এসব কিছু থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর মামলা হামলা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ গ্ৰেপ্তারকৃত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুকবুল হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাখাওয়াত হোসেন খান এসব কথা বলেন। ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে মহানগরীর মিশনপাড়া মোড়ে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। 

তিনি আরো বলেন, সরকারের দুঃশাসন আর আওয়ামী লীগের এমপি মন্ত্রীদের সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপি সারাদেশে দশটি বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করে, যার শেষটি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপির পল্টন কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সরকার পল্টনে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। এমনটি ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে পল্টন কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে সরকারের পেটুয়া পুলিশ বাহিনী। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে নিরীহ নেতাকর্মীদের উপর। পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুকবুল নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্ম। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ কয়েকশো নেতা কর্মীকে। আমি আজকের এই সভা থেকে মহাসচিব সহ গ্রেপ্তার সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। সেই সাথে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবী মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি‌। অন্যথায় যদি কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তবে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

এতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশে মহানগর যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করে।

এসময় মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্ৰেপ্তারকৃত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপি নেতা মকবুল হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন।

সমাবেশ পরিচালনা করতে গিয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৯মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সেই শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক দল বিএনপিকে মিছিল মিটিং করতে বাধা দেয়, বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে, বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর গুলি করে, হামলা ও মিথ্যা মামলা করে দেশের নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে নির্যাতন হয়রানি করছে।

তিনি আরো বলেন, রাতের ভোটের এই সরকার জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়, জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ভয় পায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানকে ভয় পায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের ভয় পায়, তাই বিএনপির নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপির কার্যালয়ের সামনে হতো। কিন্তু নেতাকর্মীদের উপর গুলি করে পুলিশ। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল মুকবুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করলো। সেদিন শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের অহেতুক গ্রেপ্তার করে মিথ্যা সাঁজানো মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখায়। দেশের বৃহত্তর ও সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে তছনছ করা হলো। রাস্তায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ ক্যাডার বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদের মোবাইল চেক করে। অনেক স্থানে সরকারি দলের ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, এমএইচ মামুন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট এইচ এম আনোয়ার প্রধান, বরকত উল্লাহ, সাখাওয়াত ইসলাম রান, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, শাহিন আহমেদ, মাহমুদুর রহমান, মাসুদ রানা, হাবিবুর রহমান দুলাল, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, ফারুক হোসেন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, বন্দর থানা বিএনপি নেতা নাজমুল হক রানা, মহিউদ্দীন শিশির, হারুন অর রশিদ লিটন,গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিয়াজী, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফি উদ্দিন রিয়াদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু, যুবদল নেতা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, সাইফুল ইসলাম আপন, পারভেজ খান, মানিক বেপারী, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।