সাখাওয়াত ও আইনজীবী ফোরামের ‌’ভুমিকা ও অবদান’ ছিনতাইয়ের চেষ্টা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিগত বছরগুলোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এবারই মামলার শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে আইনি লড়াইয়ে পুরোদস্তর সমষ্ঠিগতভাবে আইনি সেবা দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপির আইনজীবীরা। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সিনিয়র ও তরুণ প্রজন্মের আইনজীবীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন তারা। নিজেদের পেশাগত মামলার চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে। জেলার সাতটি থানার মামলাগুলো পরিচালনার জন্য স্থানীয় এলাকার আইনজীবীদের মাঝে দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে। তারা লড়ছেন নেতাকর্মীদের জামিনে মুক্ত করার চেষ্টায়।

জানাগেছে, মামলার শিকার নেতাকর্মীদের আইনি সেবার বিষয়ে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। একই সঙ্গে তিনি নেতাকর্মীদের রিমান্ড বাতিল আবেদন শুনানি, জামিন শুনানিগুলোতে নিজেও অংশগ্রহণ করছেন। জটিল মামলাগুলো তিনি নিজেই পরিচালনা করছেন গুরুত্ব দিয়ে। মামলার শিকার মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলার বিষয়ে খোঁজখবর ও সহযোগীতা করছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুও।

একই সঙ্গে নেতাকর্মীদের পাশে আইনি লড়াইয়ে ব্যাপক প্রসংশা পাচ্ছেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকিরের নেতৃত্ব। অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে আইনি সেবা দিচ্ছেন আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়নও।

অন্যদিকে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সার্বিক মনিটরিংয়ে যখন মামলার শিকার নেতাকর্মীদের আইনি সেবার মাধ্যমে জামিনে মুক্ত করতে উপরোক্ত আইনজীবীরা আদালতের কাঠগড়ায় দৌড়াচ্ছেন তখন ওইসব নেতাকর্মীদের বাসায় যাচ্ছেন একশ্রেণির সুবিধাবাদী, কেউ কেউ আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টিঘেষা নামদারী বিএনপি নেতারা। কেউ কেউ বিএনপি থেকে বহিস্কৃত হয়ে এখন সাখাওয়াত ও আইনজীবী ফোরামের ভুমিকা-অবদান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছেন মামলার শিকার নেতাকর্মীদের বাসায় গিয়ে। অথচ যেসব নেতাকর্মীদের মামলা পরিচলনা করছেন সাখাওয়াত হোসেন খান ও আইনজীবী ফোরাম, সেইসব নেতাকর্মীদের বাসায় শান্তনার বাণী নিয়ে ফটোসেশন করে মিডিয়াতে প্রচার করে পরিশ্রমী আইনজীবী নেতাদের হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন। যারা আইনজীবী হয়েও যেসব নেতাকর্মীদের মামলাই পরিচালনা করছেন না, তাদের বাসায় গিয়ে নিজেকে খোঁজনেওয়ালা হিসেবে জাহির করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি হামিদুর রহমান সুমন, যুবদল নেতা সামসুল হক ও স্বপনের মামলাও পরিচালনা করছেন সাখাওয়াত হোসেন খান ও তার টিম। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর এসব নেতাকর্মীদের বাসায় যান বিএনপি থেকে বহিস্কৃত অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ফটোসেশন করে মিডিয়াতে প্রচার করা হয়েছে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা নাকি কর্মীদের খোঁজখবর রাখছেন না। অথচ তৈমূর আলম এসব নেতাকর্মীদের মামলা পরিচালনাই করছেন না। এভাবে সাখাওয়াত ও আইনজীবী ফোরামের ভুমিকা ও অবদান ছিনতাইয়ের চেষ্টা চলছে বলে মনে করছেন বিএনপির আইনজীবীরা।

নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ডজন ডজন মামলায় আসামি হয়েছেন। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাবি- গত ১৪টি বছর ধরে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়েছেন। যেসব মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন। সপ্তাহের প্রতিটি দিনেই আদালতে উপস্থিত হতে হচ্ছে জেলার বিভিন্ন থানা/উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের।

গত ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে আন্দোলন সংগ্রাম ইস্যুতে প্রতিটি থানায় দুটি একটি করে মামলা দায়ের হয়েছে, যেসব মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ওইদিন যুবদল নেতা শাওন প্রধান নিহত হোন। কেন্দ্র ঘোষিত প্রায় অধিকাংশ কর্মসূচি পালন করতে গেলেই মামলার শিকার হোন নেতাকর্মীরা। নির্বাচন নাগাদ সেই মামলার সংখ্যা আরো বেড়ে যায়।

এমন পরিস্থিতিতে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য এক আস্থা ও ভরসাস্থল হয়ে ওঠেছিলেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। যিনি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক একাধিকবারের নির্বাচিত সভাপতি। ২০১৪ সালে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার সহ ৭ খুনের ঘটনায় আইনজীবী সমাজকে নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলে দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। অদম্য সাহসিকতায় সাত খুনের ঘটনায় মামলা ও বিচারে তার ভুমিকা ব্যাপক আলোড়িত হয়। সেই থেকে আদালতপাড়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য আরো বড় শক্তি হিসেবে আইনি সহায়তায় ভুমিকা রেখে আসছেন সাখাওয়াত হোসেন খান।

কোর্টপাড়ায় আইনি সেবায় সাখাওয়াত হোসেন খান আছেন- এমনটা ভেবে বিএনপি নেতাকর্মীরাও মামলায় হাজিরা দিতে ও জামিন আবেদন করতে সাহস পান। বিএনপির মামলার শিকার নেতাকর্মীদের জন্য সাখাওয়াত হোসেন খান বিরাট শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। নেতাকর্মীরা জানান, সাখাওয়াত হোসেন খান মহানগর বিএনপির রাজনীতি করলেও তিনি আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ সহ সাতটি থানার নেতাকর্মীদের মধ্যে কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন সেই খবর তাকে দেয়া হলেই কোর্টে আইনি সেবা দিতে ছুটে গেছেন। নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন কখনো কখনো এমন খবর জানতে পেরেও নিজ উদ্যোগে নেতাকর্মীদের আইনি সেবা দিতে ছুটে গেছেন তিনি। বিএনপি নেতাকর্মীদের কোনো রাজনৈতিক মামলায় আইনি সেবা দিতে কার্পন্য করেননি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান।