সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে হিসেব কষছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে তিনবার এমপি হয়ে হেট্রিক করেছেন বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। স্থানীয় আওয়ামীলীগ এখন তার একক নিয়ন্ত্রণে। তার অঙ্গুলী ইশারাতেই চলছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক ও দলীয় কার্যক্রম। অন্যদিকে বিএনপির তিনপক্ষের বৈরী অবস্থানের কারনে সাংগঠনিকভাবে শক্তি যোগান দিতে পারছেনা বিএনপি। সামনের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন লড়াইয়ে মাঠে আছেন তিনজন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বাবের মত আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক পান নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি নির্বাচিত হয়ে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজালাল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ ভুঁইয়াকে সরিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের একক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন এমপি বাবু। গত নির্বাচনে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে পারেননি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল পারভেজ। তার সঙ্গে ডান হাত ও বামহাত হিসেবে কাজ করেছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার।
হেলো সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েই ইকবাল পারভেজকে পল্টি দিয়ে এমপি বাবু বলয়ে তরী ভিড়ান। সেই নির্বাচনেও মমতাজ হোসেন মনোনয়ন নিয়ে আলোচনায় ছিলেন। কিন্তু মাঠের রাজনীতিতে ছিলেন না। সাবেক এমপি এমদাদুল হক ভুঁইয়ার ভুমিকাও ছিলো ইকবাল পারভেজের পক্ষে। পুরোদস্তর আড়াইহাজারে সক্রিয় না থাকলেও নিয়মিত আড়াইহাজারের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও যাতায়াত ছিলো ইকবাল পারভেজের। গত নির্বাচনের পর ইকবাল পারভেজের বেশকজন নেতাকর্মীর নামে মামলাও দিয়েছিলেন এমপি বাবু ও তার লোকজন। ইকবাল পারভেজের অনেক নেতাকর্মী কারাভোগও করেছেন।
তবে সামনের নির্বাচনে ৪র্থ বারের মত নজরুল ইসলাম বাবু মনোনয়ন না পেলে ইকবাল পারভেজের ভাগ্যেই জুটতে পারে নৌকা প্রতীক। সেক্ষেত্রে এমদাদুল হক ভুঁইয়া, মিজানুর রহমান বাচ্চু, শাহজালাল মিয়া, আব্দুর রশিদ ভুঁইয়ার মত নেতারাও থাকতে পারেন ইকবাল পারভেজের পাশে। উপজেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এমপি বাবুর মনের মত হলেও ত্যাগী ও পরীক্ষিত অনেক নেতাকর্মীরা ক্ষুব্দ। ফলে সামনের নির্বাচনে এমপি বাবুর মনোনয়ন লড়াইটি কঠিনই হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর চাঙ্গা হয়ে ওঠেছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আড়াইহাজারে শোডাউনও করেছেন আঙ্গুর। সেই থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে যাচ্ছেন মাহমুদুর রহমান সুমন। তবে আড়াইহাজারেরই সীমাবদ্দ রয়েছেন আঙ্গুর। জেলা বিএনপির কমিটি হওয়ার পর ব্যাকফুটে চলে গেছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলয়ের নেতাকর্মীরা।
গত নির্বাচনে তারা তিনজনই বিএনপি থেকে প্রাথমিকভাবে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পান। শেষতক চুড়ান্তভাবে মনোনয়ন পান নজরুল ইসলাম আজাদ। আজাদের লোকজন অভিযোগ করে আসছেন আঙ্গুর ও সুমন নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। নির্বাচনের পর আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির মুল কমিটি ও এর বেশকটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো একক নিয়ন্ত্রনে নেন আজাদ। কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন আঙ্গুর ও সুমন। জেলা বিএনপির পুরো সাপোর্ট ছিলো আজাদের দিকে। গত ১৫ নভেম্বর গিয়াস ও খোকনের নেতৃত্বে নতুন কমিটি গঠনের পর মাঠে ফিরেছেন আঙ্গুর ও সুমন। এক্ষেত্রে সামনের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন ভাগিয়ে আজাদের সামনে কঠিন পথ।