সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ে মেঘনা টোল প্লাজা এলাকা থেকে মহাসড়কের দু‘প্রান্তে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সকাল থেকে সৃষ্ট এ যানজট শুরু হয়। দিনভর অব্যাহতভাবে লেগে থাকা এ যানজটের কবলে পড়ে শতশত পরিবহন যাত্রী চরম ভোগান্তির শিকার। অনেক পরিবহন যাত্রী তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে পায়ে হেঁটে চলেছেন।
এলাকাবাসী ও পরিবহন মালিক শ্রমিকদের অভিযোগ, শবেবরাতসহ সরকারি তিন দিন ছুটি হওয়ায় যানবাহনের চাপ অন্যদিনের তুলনায় ৪ গুণ বেশী বেড়ে গিয়েছে। এছাড়াও মেঘনা সেতুর টোল আদায়ে ধীরগতি, অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল, কাঁচপুর সেতুতে গাড়ি বিকল, নতুনভাবে দুটি সেতুর কাজ পরিচালনা করা, সেতুর উপর যাত্রীবাহী বাস বিকল হওয়া ও কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের দায়িত্ব অবহেলা করার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরশনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যকারি প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা।
শিমরাইল ও কাঁচপুর এলাকায় যানবাহন দাঁড় করিয়ে পুলিশ ও চাঁদাবাজরা চাঁদা আদায় করার কারনে এসব যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। রাস্তার পাশে যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে যাত্রী উঠা নামা। যদিও সরকার রাস্তা প্রসারের জন্য অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে এখন সেসব এলাকায় যেমন কাঁচপুর, মদনপুর, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা এলাকায় রাস্তা দখল করে চাঁদাবাজরা দোকান পাঠ বসিয়ে ও গাড়ির স্ট্যান্ড তৈরি করে যানজটের সৃষ্টি করেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। এমন কোন সপ্তাহ নেই যে এ মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়না। পুলিশ চাইলে এবং সরকারের স্বদিচ্ছা থাকলেই যানজট নিরশন একান্ত সম্ভব বলে তাদের দাবি।
কাঁচপুর এলাকার স্থানীয় এক ব্যক্তি ক্ষোভের সাথে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট তো নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে গেছে। আমাদের এখন গায়ে সহনীয় অবস্থা হযে গেছে। এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পরে মানুষের জীবন নাকাল অবস্থা প্রশাসন বা সরকারের এতে কোন মাথা ব্যাথা নেই। পুলিশ থাকে সব সময় ধান্দাবাজিতে। যানজট নিরশনে তাদের তেমন ভুমিকা নেই বললেই চলে।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম আলী সরদার বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন, এছাড়া শবে বরাত সহ তিনদিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে বাড়তি গাড়ির চাপ ছিল বেশি। মেঘনা টোল প্লাজায় টোল আদায়ে ধীর গতির কারনে এ যানজট দীর্ঘ হতে থাকে। শুক্রবার ভোরে কাঁচপুর সেতুতে তিনটি গাড়ি বিকল হওয়ার কারনে যান চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে কাঁচপুর থেকে গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া এলাকায় অন্যদিকে সাইনর্বোড ও শনির আখড়া পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিন সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তীব্র যানজটের কবলে আটকে আছে শতশত যানবাহন। আধা ঘন্টা পরপর ধীরগতিতে একটু একটু করে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেলেও তা আবার মুহূর্তের মধ্যে থেমে যাচ্ছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুৃিলশের আরেক পরিদর্শক (তদন্ত) আলী রেজা জানান, সরকারি ছুটিসহ টানা ৩দিন ছুটি হওয়ায় ঘরমূখী হয়ে পড়ে মানুষ। অনেকে তাদের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। অতিরিক্ত পরিমান যানবাহন চলাচল করার কারনে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয়। যানজট নিরশনে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ অব্যাহত ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে যানজট নিরশন করা সম্ভব হবে।
জামাল কার্গো সার্ভিসের চালক আতিক জানান, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন, এছাড়া শবেবরাতসহ সরকারী তিন দিন ছুটি থাকায় অতিরিক্ত পন্যবাহী গাড়ির চাপ, মেঘনা টোল প্লাজায় ধীরগতিতে টোল আদায় ও মহাসড়কে কাঁচপুর সেতুতে ৩টি গাড়ি বিকল হওয়ায় কাঁচপুর থেকে যানজট দীর্ঘ হতে থাকে। ফলে মহাসড়কে সৃষ্টি হয়ে যানজটে পরিণত হয়।
সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির জানান, মহাসড়কে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ থাকার কারনে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনের হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সোনারগাঁ থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।