সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই অবৈধ সরকার এবং সরকার প্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে দিতে হবে। সংসদীয় আসন শুন্য না হলে সে আসনে কখনো নির্বাচন হয় না। তাছাড়া বর্তমানে যে নির্বাচন কমিশন আছে তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার যোগ্যতা রাখে না। বর্তমান সরকারের ফরমায়েশ পালনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সামনে এ আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়ে গেলেন। ১৫৩ টা আসন হলে তো সরকার গঠন করাই যায়, আর নির্বাচনের প্রয়োজন হয়না। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই শেষ করে ফেললেন। পুলিশের মাঝে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেলো কার চেয়ে কে বেশি ভোট দিতে পারে। ১৯৭০ সালের একটা নির্বাচনে ৬৮ পার্সেন্ট ভোট কাস্ট হয়েছিলো। এরপর আর এতো ভোট কোথাও পড়েনি। ২০১৮ সালে ১১৭ পার্সেন্ট ভোট পড়েছে, কোথাও পড়েছে ১০২ পার্সেন্ট পড়েছে। মরা মানুষ, জেতা মানুষ, বিদেশের মানুষ যে যেখানে আছে সবাই ভোট দিছে। এ ধরনের ঠাট্টা তামাশার ভোট জনগণ পছন্দ করে না, আর জনগণের সাথে ঠাট্টা তামাশা করা সাংবিধানিক অপরাধ।
তিনি আরো বলেন, দেশে অনেক জ্ঞানীগুণী গণ্যমান্য লোকজন আছেন যারা নিরপেক্ষ। বিএনপি বলছে এ ধরনের নিরপেক্ষ লোকদের দিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করুন। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তখন সকল দল সে নির্বাচনে অংশ নেবে। তাই আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি সংবিধানে যুক্ত করুন আর যথাসময়ে রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। এছাড়া আপনার কাছে আর কোন পথ খোলা নেই।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে আজকের এই পদযাত্রাকে যারা সাফল্যমন্ডিত করেছেন সেই নারায়ণগঞ্জবাসীকে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে। বিএনপির আজকের এই পদযাত্রা কর্মসূচি যাতে হতে না পারে সেজন্য সরকার এবং সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। সকল বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে যারা আজকের এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তারাই বিএনপির সাচ্চা কর্মী আগামী দিনেও সরকার পতনের ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের যেকোনো কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি এবং প্রতিটি অঙ্গ সংগঠন রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
বক্তব্য পর্ব শেষে পদযাত্রা কর্মসূচি নগরীর খানপুর হাসপাতাল রোড থেকে শুরু করে মেট্রো মোড় ঘুরে মিশন পাড়া দিয়ে চাষাড়া চত্বরে ঘুরে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির।
পদযাত্রায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দল, কৃষকদল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতীদলসহ বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি প্রত্যেকটি ইউনিয়নের সাধারণ জনগণও সম্পৃক্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন সুসজ্জিত হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই শ্লোগানে শ্লোগানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে খানপুর হাসপাতাল রোডে এসে জড়ো হতে থাকে।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ রেজা রিপন, এড. রফিক আহমেদ, সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, মাহমুদুর রহমান, রাশিদা জামাল, বরকত উল্লাহ, হাবিবুর রহমান দুলাল, হাবিবুর রহমান মিঠু, এড. আনোয়ার প্রধান, শাহিন আহমেদ, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, ফারুক হোসেন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদ, বিএনপি নেতা নাজমুল হক রানা, মহি উদ্দিন শিশির, হারুন উর রশিদ লিটন, নজরুল ইসলাম সরদার, আবুল হোসেন রিপন, নাসির উদ্দিন টিপু, বাবু খান, সাইফুল ইসলাম বাবু, হিরা সরদার, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক জাহিদ খন্দকার, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক মামুন ভূইয়া, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সমন্বয়ক সম্রাট হাসান সুজন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাখাওয়াত ইসলাম রানা, মমিনুর রহমান বাবু, মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক মীর আলমগীর হোসেন, সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক রাহিদ ইসতিয়াক শিকদার, কৃষক দল নেতা আক্তার হোসেন সবুজ, মনোয়ার হোসেন সোহেল, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।