সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর থানায় ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সমর্থনে মাসুদ রানাকে সভাপতি ও হাজী জাবেদ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক এবং মো. আবদুল্লাহকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে মহানগর বিএনপি। ৫ এপ্রিল বুধবার বিকেল ৪টায় বন্দরে মহানগরীর ২৪নং ওয়ার্ডস্থ দাসেরগাঁও জোনাকি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে আমরা সচেষ্ট হলে সরকারি দলের বিভিন্ন এমপি মন্ত্রী এবং সরকারি প্রশাসনের ইন্দনে বিএনপিকে দ্বিখণ্ডিত দেখানোর জন্য বিএনপি’র মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু লোক আছে, যারা বিএনপিকে খন্ডিত করার জন্য এবং বিএনপি যাতে কোন কমিটি গঠন না করতে পারে এবং আগামীতে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম যাতে হতে না পারে তার জন্য আমাদের ঘরে ঘাপটিমারা কিছু লোক দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা পায়তারা করছে।
তিনি আরো বলেন, ইতিপূর্বে আপনারা দেখেছেন মহানগর বিএনপি কমিটি গঠন করার পর তারা কয়েকজন পদত্যাগ করেছিলেন। কয়েকদিন পূর্বে তাদের মধ্যে দুজনের পদত্যাগ পত্র কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কাছে গৃহীত হয়েছে। আপনারা দেখেছেন ২০১৮সালের নির্বাচনে প্রহশনের নির্বাচনে বিএনপির কিছু লোকের ইন্দনে হারিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেই লোকেরা আবারো সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে বিএনপিকে কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। আমরা যখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করি, তখন তারা নৌকা-লাঙ্গলের পক্ষ নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সাখাওয়াত বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমান আমাদের এই কমিটি দিয়েছেন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। আমাদের বুকের শেষ রক্ত দিয়ে হলেও মহানগর বিএনপিকে আমরা সুসংগঠিত করে তুলবো। একটি গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে মহানগর বিএনপিকে গড়ে তুলবো। যাতে করে সারা বাংলাদেশের মধ্যে মহানগর বিএনপি একটি মডেল হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করছি। আগামী দিনে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনের সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে। সে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে একের পর এক কর্মসূচির পাশাপাশি ১০দফা ঘোষণা করা হয়েছে। সেই দশ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আমাদেরকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আন্দোলনের সভায় রাজপথে থাকবেন ইনশাল্লাহ। এই সরকারকে পদত্যাগের মাধ্যমে বিএনপি তথা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, যারা আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে তাদেরকে নিয়ে আমরা ওয়ার্ড, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করব। ইতিমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড থানা ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বন্দর ২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি যে কমিটি হবে আগামীতে জনগণের ভোটার অধিকার আন্দোলন সংগ্রামে যাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারে সেই নেতৃত্বকে আমরা বাছাই করে নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে এই ওয়ার্ডে বিএনপির আরো শক্তিশালী হয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে এটাই আমরা আশা করি ।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, বন্দরের মাটিতে কি লাঙ্গল মার্কা-নৌকা মার্কা বিএনপি করতে চান? আপনারা কার বিএনপি করতে চান? আপনারা শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত মানবেন নাকি লাঙ্গল মার্কাদের মানবেন? গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আমাকে সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব দিয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। কমিটি পেয়ে আমরা দলীয় সকল কর্মসূচিগুলো পালন করে যাচ্ছি। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সকল কর্মসূচি পালন করেছি। একই সঙ্গে সদর বন্দর বিভিন্ন কমিটি গঠন করেছি। আমাদের বিএনপি করে দাবি করা কিছু লোক ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে লাঙ্গলের পক্ষ নিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বের করে দিয়েছিলো। তারা মুখে বলে বিএনপি, তাদের অন্তরে নৌকা-লাঙ্গল। তারা আবারো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সাখাওয়াত হোসেন খান ও আমি কোনো নৌকা লাঙ্গল মার্কার লোকদের কাছে মাথানত করবো না। তাদেরকে বিএনপিতে প্রশ্রয় দিবো না। আমরা যাদেরকে রাজপথে পাবো তারা শহীদ জিয়ার কথা বলবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথা বলবে, তারা দেশনায়ক তারেক রহমানের কথা বলবে। আমরা তাদেরকে নিয়ে রাজপথে থাকবো।
তিনি নৌকা-লাঙ্গল মার্কার অনুগতদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা তওবা করুন। তওবা করে সহীহ শুদ্ধ হয়ে বিএনপির রাজনীতি করুন, তখন নেতাকর্মীরা সিদ্ধান্ত নিবে আপনাদের ক্ষমা করা হবে কিনা। নৌকা-লাঙ্গল মার্কার অনুগত হয়ে বিএনপির লোক দাবি করলে নেতাকর্মীরা আপনাদের ক্ষমা করা হবে না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সমন্বয়ক মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও বন্দর থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজী জাবেদ হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ রানা, বন্দর থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেছ, সদস্য সচিব নাজমুল হক রানা।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, ফারুক হোসেন, শাহিন আহমেদ, বন্দর থানা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বাদল, নাছির উল্লাহ্ টিপু, ইকবাল হোসেন, মো. সেলিম, সোহেল খান বাবু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হক, কাজী জিয়াউল হাসান নাঈম, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক জাহিদ খন্দকার, বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন ও বন্দর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রাজীব প্রমুখ।
সম্মেলনে সকল নেতাকর্মীদের সমর্থনে মাসুদ রানাকে সভাপতি ও হাজী জাবেদ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক এবং মো. আবদুল্লাহকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।