সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এই নির্বাচন নিয়ে এখনই কিছু ভাবছেনা বিএনপি। বিএনপির একটাই টার্গেট আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তবে বিএনপি যা কিছুই করুক, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি আওয়ামীলীগ নেতারা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদিও গত নির্বাচনের মত ওতটা হাকডাক নেই, তবে ৫টি আসনে এবারো মনোনয়ন প্রত্যাশির সংখ্যা শতাধিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনে বর্তমানে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক। তিনি একই সঙ্গে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রীও। টানা তিনবার তিনি এই আসনে এমপি হয়েছেন। তবে গত নির্বাচনে আসনে ৩৬জন নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিকও। তবে শেষতক গাজীই মনোনয়ন পান। রূপগঞ্জ আসনেও নৌকার শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে আওয়ামীলীগ।
নারায়ণগঞ্জ-৩(আড়াইহাজার) আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। এ আসনে গত নির্বাচনে হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ। তবে এবারো তিনি ধীরে ধীরে মনোনয়ন লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছেন। আরো বেশকজন মনোনয়ন প্রত্যাশি থাকলেও তাদের রাজনীতিতে দেখা নেই। সামনের নির্বাচনেও এমপি বাবু ও ইকবাল পারভেজের মধ্যেই হবে মনোনয়ন লড়াই।
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে ২০১৪ সাল থেকে টানা দুইবার এমপি হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দলের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হোন। দুই নির্বাচনেই নৌকা প্রতীক দাবি করে আসছেন আওয়ামীলীগ নেতারা। গত নির্বাচনে ১৬ জন আওয়ামীলীগ নেতা সেখানে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এমনকি সোনারগাঁয়ের বাহিরের নেতারাও সেই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। সামনের নির্বাচনেও কায়সার হাসনাত ছাড়াও এই আসন থেকে নৌকার দাবিদার কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এইচএম মাসুদ দুলাল।
নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের টানা দুইবারের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। এর আগে ২০০৮ সালে শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি ছিলেন প্রয়াত চলচিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী। গত নির্বাচনে এই আসন থেকে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ ও কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাহিদা সুলতানা মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। তবে শেষতক শামীম ওসমান মনোনয়ন পান। সামনেও তারই সম্ভাবনা বেশি। দুটি থানা এলাকার আওয়ামীলীগ পুরোপুরি শামীম ওসমানের নিয়ন্ত্রণে।
অন্যদিকে সবচেয়ে জটিল হিসেব নিকেষের আসন নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনটি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হোন প্রয়াত নাসিম ওসমান। ওই বছর নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনেও মহাজোট থেকে এমপি হোন সেলিম ওসমান। গত নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হোন সেলিম ওসমান। সান নারায়ণগঞ্জকে নেতাকর্মীরা জানান গত নির্বাচনে জোরালো নৌকার দাবিদার ছিলেন আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। তবে শেষতক জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়। তবে সামনের নির্বাচনে এবার অলোচনায় যুক্ত হয়েছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। এই আসনে আওয়ামীলীগের একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও মহাজোটের কারনে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিচ্ছে আওয়ামীলীগ।