সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের ১২২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ২১ জুন বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী।
কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ডা: চীনু রানী রায়, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিনা পারভীন, লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানারা বেগম, পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ সুজাতা আফরোজ।
বক্তা বলেন, ২০ জুন কবি সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্ম বার্ষিকী। জননী সাহসিকা, মহীয়সী নারী নারীমুক্তি তথা মানবমুক্তির চেতনায় নারীসমাজকে সচেতন এবং সংগঠিত করার জন্য মহিলা পরিষদের নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামাল। তাঁর জন্ম হয়েছিল রক্ষণশীল অভিজাত পরিবারে। নানা বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে তিনি শৈশব থেকেই সংগ্রামী জীবন যাপন করেন। স্বশিক্ষিত হয়ে মানুষের ভালবাসায় সমাজের বাতিঘর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দেশ, রাষ্ট্র, সমাজের সকল সংকট ও ক্রান্তিলগ্নে সুফিয়া কামাল পথ দেখিয়েছেন আলোর মশাল হাতে নিয়ে।
রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম গ্রহন করেও তিনি উপমহাদেশের অতি প্রাচীন মানবতাধর্মের অনুসারী এবং অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনায় আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনি ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালি জাতির আত্মবিকাশের সকল আন্দেলনে-সংগ্রামে সাহসী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। কবি সুফিয়া কামাল ১৯৬৯-৭০ সালে বাঙালি জাতির আত্মপ্রকাশের কালপর্বে সীমাহীন কর্মপ্রেরণা, কর্মোদ্যোগ ও বহুমাত্রিক প্রচেষ্টার পটভূমিতে শতাব্দীর নারী আন্দোলনের আদর্শ ও ধ্যান ধারনায় স্নাত হয়ে একটি নতুন সংগ্রামের ধারা সৃষ্টি করেন।
পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি প্রাক্তন ছাত্রনেতা, প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী, সচেতন গৃহিনীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন মহিলা পরিষদ। সুফিয়া কামাল তার সীমাহীন সংগ্রামের ধারায় অতীত ও বর্তমানের মধ্যে ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন তৈরি করে সংগঠনে জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। নতুন প্রজন্মের মাঝে চিরঞ্জীব সুফিয়া কামাল যুগ যুগ বেঁচে থাকুক। তবে আজ তরুণ প্রজন্ম এই মানবিক বোধ গ্রহণ বা অর্জন করতে পারছে না। এই পথ দেখানোর প্রদর্শকের অভাব। সকলের দায়িত্ব তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা, মহিয়সীদের লেখনী পড়তে উৎসাহিত করা। সবসময় তরুণরাই দেশের চালিকা শক্তি, তাদের হৃদয় কোমল, তাদের পথ দেখালে অবশ্যই মানবিক দেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কবিতা আবৃত্তি করেন ভারপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণ সম্পাদক রওনক রেহানা, গান পরিবেশন করেন সদস্য দীপা রায়। জেলা, শহর ও পাড়ার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।