সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি হচ্ছে হচ্ছে করেও হচ্ছে না। জেলা যুবদলের আহ্বায়ক পদে বহাল থাকাবস্থাতেই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদেও অধিষ্ট হয়ে গেলেন গোলাম ফারুক খোকন। জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশা নিয়ে বেশকজন যুবদল নেতা আলোচনায় থাকলেও জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে নানা সমীকরণে অন্তরালের রাজনীতিতে বেশ জোরালো আলোচনায় জেলা যুবদলের এই ৪ নেতা। মুলদলের একাধিক নেতা ও যুবদলের বেশকজন নেতা অনেকটা নিশ্চিত করে বলেছেন, এই চার জনের মধ্যে যেকোনো দুজনের হাতেই ওঠতে যাচ্ছে জেলা যুবদলের শীর্ষ দুটি পদ। প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে কাদের নেতৃত্বে আসছে জেলা যুবদল।
শীর্ষ নেতাদের মতে, জেলা যুবদলের শীর্ষ পদে আসার লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেক, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব। সিনিয়র জুনিয়র সমন্বয়ে হলে বাকি দুজন বাদ পড়বেন। আবার সাদেক ও স্বপনের নেতৃত্বে কমিটি হলে বাকি দুজন বাদ পড়বেন। জেলা বিএনপির কমিটি হওয়ার পূর্বে রনির যে নিশ্চয়তা ছিলো সেটা এখন নেতারা দেখছেন না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনের সমর্থন রয়েছে স্বপনের দিকে। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়ার গুডবুকে এখন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানের পুত্র সজীব। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের সমর্থন আছে সাদেকুর রহমান সাদেকের দিকে। যদিও দিপু ভুঁইয়া, গিয়াসউদ্দীন ও খোকন সিন্ডিকেটে রনির শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও পরিচিতি থাকায় রনিকেও বাদ দেয়া হতে পারে এমনটা বলা যাবে না। যদিও এরি মাঝে খবর বেরিয়েছে জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে সজীবকে জেলা যুবদলের শীর্ষ পদে আনার সমঝোতা হয়েছে। জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশি শীর্ষ এই চার জনেরই শক্ত অবস্থান রয়েছে বিভিন্ন দিক থেকে। এসব জটিল হিসেব নিকেশের কারনেই আটকে আছে জেলা যুবদলের কমিটি। তবে আহ্বায়ক কমিটি হলে চারজনকে রেখেই হয়তো জেলা যুবদলের কমিটি গঠন করা হতেও পারে।
এদিকে নেতাকর্মীরা আরো জানান, গত বছরের ১৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব দেয়ার পর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির একক নেতৃত্বে একদিকে চলছে যুবদলের একাংশের রাজনীতি। অপরদিকে জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশিদের ভিন্নভিন্ন অবস্থান থেকে জেলা যুবদলের ব্যানারে চালিয়ে আসছে জেলা যুবদলের রাজনৈতিক কার্যক্রম। জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশি প্রায় এক ডজন নেতা দলের কার্যক্রমে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছেন। নানা বলয় ও গ্রুপিংয়ের কারনে জেলা যুবদলের কমিটি গঠন জটিল আকার ধারণ করেছে, যার ফলে জেলা যুবদলের কমিটি আসছেনা বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে ২০২২ সালের ১৬ মার্চ তারিখে গোলাম ফারুক খোকনকে আহ্বায়ক ও মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রাখা হয় ভিপি কবির হোসেনকে। এর আগের কমিটিতে জেলা যুবদলের সভাপতি পদে ছিলেন শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন গোলাম ফারুক খোকন। ওই সময় রনি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি।
নেতাকর্মীদের মতামত, জেলা যুবদলের কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রিতার কারনে জেলা যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। সেই নেতৃত্বের প্রতিযোগীতার সঙ্গে তাদের মাঝে চলছে নোংরা রাজনীতিও। সেই নোংরা রাজনীতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে ঢাকা বিভাগীয় যুবদলের ইফতার পার্টির আয়োজন ও বাতিল করা নিয়ে। ইফতার পার্টি বাতিলের পেছনে সরকারি দলের চেয়ে নিজ দলের নেতাদের বৃহত্তর যে ভুমিকা ছিলো সেটা কেউ স্বীকার না করলেও স্পষ্ট হয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতাদের কাছেও। এই ইফতার পার্টি ভন্ডুলের পেছনে নিজ দলের মধ্যে যাদের হাত রয়েছে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সরকারের এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন বলে নেতাকর্মীরা জানান। ফলে জেলা যুবদলের কমিটি গঠনে বিরাট চমক দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।