সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র ৬ মাস। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উল আযহার পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নেতৃত্বস্থানীয় শীর্ষ নেতাদের মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে এমন কিছু তরুণ নেতৃত্ব রয়েছে যারা মুলদলের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক না হলেও নারায়ণগঞ্জের রাজপথের রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেছেন। আগামী নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে এসব নেতাদের ভুমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।
যাদের মধ্যে অন্যতম মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। তিনি দলের স্বার্থে প্রত্যাহার করে নেয়ায় সম্মেলনের প্রধান অতিথি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রসংশা করেছেন। সেদিন নেতাকর্মীরা বুঝতে পেরেছেন বিএনপির রাজনীতিতে তার ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। তিনি এর আগে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, পরবর্তী কমিটিতে সদস্য ছিলেন। জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কও ছিলেন।
এ ছাড়াও শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা যিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। সরকারি তোলারাম কলেজে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে রাজনীতিতে সরব হোন শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন। মহানগর বিএনপির আওতাধীন সদর থানা, বন্দর থানা উপজেলা কমিটি সহ প্রতিটি ইউনিট কমিটি গঠনে রেজা রিপনের ভুমিকা ছিলো উল্লেখ করার মত। একই সঙ্গে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন মহানগর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের পাশে থেকে। সামনের রাজনীতিতে যে রেজা রিপন বেশ গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তিনি বুঝিয়েছেন তার কর্মের মাধ্যমে।
বন্দর থানা বিএনপির সম্মেলনে ভোটের লড়াইয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন নাসিকের কাউন্সিলর শাহেনশাহ আহমেদ। এর আগে তিনি বন্দর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ছিলেন ছাত্রদলের রাজনীতিতেও। নেতাকর্মীদের কাছে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামনের যে কোনো কঠোর আন্দোলনে রাজপথে থাকবেন শাহেনশাহ আহমেদ। বন্দর থানা বিএনপিতে যে তার শক্তি রয়েছে সেটাও তিনি প্রমাণ করেছেন। সামনের আন্দোলনে রাজপথে এই নেতার ভুমিকাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আরেক আলোচিত নেতা অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান। নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আইনজীবী সমাজের রাজনীতিতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তরুণ প্রজন্মের এই নেতা। সমানতালে রয়েছেন আদালতের বাহিরের রাজনীতিতেও। নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি একই ইউনিটের সদস্র সচিব পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছিলেন। তিনি জেলা জাতীয়বাদী আইনজীবী ফোরামের নির্বাচিত সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজপথের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনে পরিণত হয়েছে মহানগর যুবদল। এই যুবদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আহ্বায়ক পদে মমতাজ উদ্দীন মন্তু ও সদস্য সচিব পদে মনিরুল ইসলাম সজল। তাদের সঙ্গে আছেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সাগর প্রধান। তবে অতীতে সাগর প্রধান একাই রাজপথে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন করার নজির রেখেছেন। বর্তমানে মহানগর যুবদলের শৃঙ্খলা মেনেও রাজনীতি করছেন, আবার নিজের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে নিজেও রাজপথে নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে যাচ্ছেন। আবার তাদের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির প্রতিটা কর্মসূচিতে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা যায়। আগামী নির্বাচনকেন্দ্রীক আন্দোলনেও মহানগর যুবদলের এই তিন নেতার ভুমিকা থাকবে গুরুত্বপূর্ণ সেটাও বলা যায়।
এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হোন গোলাম ফারুক খোকন। সেই থেকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব পদে থেকে জেলা যুবদলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন মশিউর রহমান রনি। এর আগে তিনি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কও ছিলেন। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম ও একাধিকবার কারাভোগ করে এই নেতা জেলা পর্যায় ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের রাজনীতিতেও বেশ আলোচিত হয়ে ওঠেছেন। অনেকেই জানান দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টিও রয়েছে তার দিকে। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে দিনকে দিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠছেন মশিউর রহমান রনি।
একইভাবে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীবও বেশ আলোচিত নেতা হয়ে ওঠেছেন। বর্তমানে জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যশি এই নেতা সোনারগাঁও ছাড়িয়ে জেলা পর্যায়ে যুবদলের রাজনীতিতেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছেন। আগামীতে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সোনারগঁও থেকে তার ভুমিকা থাকবে বেশ সেটা অনুমেয়। তার পিতা কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে সোনারগাঁয়ের রাজপথে সজীবের অংশগ্রহণ সব সময়ই ছিলো জোরালো। পিতা পুত্র একসাথেও কারাভোগও করেছেন। কদিন পূর্বেও মান্নান কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বলা যায় সোনারগাঁয়ের রাজপথে সজীবও ফ্যাক্টর।