হাই-বাদলের অনুমোদনে সোনারগাঁও আওয়ামীলীগে তুলকালাম!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা কিংবা থানা কমিটিগুলোর অনুমোদন দিবে জেলা আওয়ামীলীগ। যদিও পৌর কমিটিগুলোও জেলা কমিটির আওতাভুক্ত হলেও অনেক ক্ষেত্রে উপজেলা কমিটিগুলো পৌর কমিটির তদারকি করে। উপজেলা কিংবা থানা কমিটি এক বা একাধিক কমিটির খসড়া কিংবা ভিন্ন ভিন্ন নাম সংগ্রহ করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার এখতিয়ার জেলা কমিটির থাকলেও এর আগেই সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ একটি প্রস্তাবিত কমিটি জেলা কমিটির হাতে জমা দিয়েই পরিচিতি সভা করে ফেলেছেন। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল কমিটির অনুমোদন দেয়ার কারো কাছে আনন্দের হলেও অনেকের মাঝে চলছে শোকের মাতম।

উপজেলার দেয়া প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য যোজন বিয়োজন করার এখতিয়ার জেলা কমিটি রাখেন সেটাও তোয়াক্তা না করার খেসারত গুণছে ‍উপজেলার প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বাদ পড়া ১৮ জন নেতা। লজ্জায় তাদের এখন মুখ লুকানো দায় হয়ে পড়েছে। প্রস্তাবিত কমিটিতে ১৮ জনের যাদের নাম রাখা হয়েছিলো তাদের অধিকাংশই ছিলেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মী। আব্দুল হাই ও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকে একমাত্র সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতেই কেবল তাদের খবরদারী। এর বাহিরে রূপগঞ্জ কিংবা আড়াইহাজারে তাদের কোনো খবরদারী চলে না। এমনকি এই দুটি এলাকার নেতাকর্মীরাও তাদের কাছে ধর্না দেয় না।

এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সম্মেলনে নির্বাচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়াকে সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির অনুমোদন করেছে জেলা কমিটি।

৪ জুলাই মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

এই কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে আরো রয়েছেন মো. জহিরুল হক, মো. মোশারফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক মিয়া, নজরুল ইসলাম মনি, আলী আকবর, অধ্যক্ষ মো. মোনতাজ উদ্দীন মর্তুজা, মাসুদ রানা মানিক ও নাসরিন সুলতানা ঝরা।

এই কমিটিতে অনেক ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মীদের ঠাই হয়নি। যেসব নেতাকর্মীরা ২০০১ সাল থেকে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে রাজপথে আন্দোলন করেছেন তাদের কারো কারো নাম নামকাওয়াস্তে রাখা হলেও অনেকের নামই ওঠেনি কমিটিতে। এবার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামীলীগ সরকার আমলে হটাত গজিয়ে ওঠা আওয়ামীলীগ নেতাদের ঠাই হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।

উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১৮ জনকে বাদ দিয়ে জেলা কমিটির ইচ্ছেমত ১৮জনকে যোজন করেছে। ওই ১৮ জনের মধ্যে বেশকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী ছিলেন, যারা রাজপথ থেকে ওঠে আসা কর্মী। এখন তাদের প্রস্তাবিত কমিটিতে নাম রেখে এবং সেই কমিটির পরিচিতি সভায় মুখ উজ্জল করে এবার তাদের মুখ লুকানোর অবস্থা হয়েছে। এসব কারনে উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা এই কমিটিতে প্রত্যাখ্যানেরও ঘোষণা দিয়েছেন।