সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, এই সরকার ইচ্ছে করে নারায়ণগঞ্জের পরিবেশকে অশান্ত করতে চায়। তারা পরিবেশকে অশান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। আওয়ামী লীগ সব সময় বাঁকা পথে চলতে বিশ্বাস করে। তারা আজকে প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে জুলুম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তোলারাম কলেজ শাখার সদস্য সচিব আজিজুল ইসলাম রাজীবের উপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৫ জুলাই শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাদের নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীব ও তার দুই সহযোদ্ধাকে অপহরণ করে একটি টর্চার সেলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করেছে। রাজিবের চোখ তুলে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছে। তারা রাজিবের একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা রাজিবের মাথাও ফাটিয়ে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন তার সারা শরীরে কত যে আঘাতের চিহ্ন। আপনারা জানেন রাজীব একজন মেধাবী ছাত্র। সে সুস্থ ধারার রাজনীতি করে। একজন সুস্থ ছেলেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে এই সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ নারায়ণগঞ্জবাসীকে যে ধরনের ম্যাসেজ দিতে চায় সে ম্যাসেজ কিন্তু এই সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা দিবে। আজকে সারাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে এই সরকারের সন্ত্রাসী, গুম খুনের বিরুদ্ধে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের সাত খুনের সময়ও কিন্তু এই নারায়ণগঞ্জের মানুষ গর্জে উঠেছিল। ঠিক একইভাবে এই নারায়ণগঞ্জের মানুষ আপনাদের ছাত্রলীগের সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে এবং দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে।
সাখাওয়াত হোসেন খান প্রশাসনকে উদ্দেশ্য বলেন, অবিলম্বে রাজিবের উপরে হামলাকারি সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করুন। এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সাধারণ মানুষ, যুবদল ছাত্রদল ও বিএনপি নেতা কর্মীরা তাদেরকে যেখানেই পাবে বিচারের ব্যবস্থা করবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আপনারা কি মার খেতে প্রস্তুত না মার দিতে প্রস্তুত। ইনশাল্লাহ আজকের পর থেকে ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদল ও বিএনপির ভাইয়েরা ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবেন। নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগ বলতে কোন সংগঠন থাকবে না। তারা কাপুরুষের মতন গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীবকে অপহরণ করে হত্যার জন্য তুলে নিয়ে গিয়ে ডাক বাংলোতে বেধরক মারধর করেছে। তার চোখ উপড়ে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। লোহার লোড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে। সাথে আরও ছাত্রদলের ৩-৪ জনকেও আহত করেছে। আজকের এ প্রতিবার সভা থেকে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
টিপু প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ হয়ে যান। আপনারা পক্ষপাতিত্ব করবেন না। আপনারা যদি পক্ষপাতিত্ব করেন আর যদি দিয়ে আসনে রাস্তায় নেমে যায় তাহলে কিন্তু আপনারা প্রতিরোধ করতে পারবেন না পারবেন না।
আমি ছাত্রলীগের অভিভাবককে প্রশ্ন করতে চাই আপনারা আর কত রক্ত নিয়ে হোলি খেলবেন। আপনার ছেলেরা অবৈধ কর্মকান্ড করবে, মাদক বিক্রি করবে। আর কত নিরপরাধ ছাত্রদলের নেতা কর্মীদেরকে নিয়ে আপনারা টর্চার করবেন। আপনি আপনার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে শাসন করেন না। আমরা জানি তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগের স্বঘোষিত একজন ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসী। সে তোলারাম কলেজকে সন্ত্রাসীদের আখড়া বানিয়েছে। তাদের পূর্ববর্তীরাও এই তোলারাম কলেজের সন্ত্রাসীর কার্যকলাপ করেছিল। কোন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী এই তোলারাম কলেজের সুষ্ঠুভাবে লেখাপড়া করতে পারেনা। আমরা বলতে চাই রাজীবকে যারা হত্যা করতে চেয়েছিলো, কাজল রনি অনিককে নির্মমভাবে প্রহর করেছে, তাদেরকে যদি আগামী ৭২ ঘন্টার ভিতরে গ্রেফতার করা না হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জে যুবদল, ছাত্রদলসহ মূলদল কঠোর কর্মসূচি দিবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল রহমান সাগরের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এমন আনোয়ার প্রধান, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান দোলন, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাহিদ ইসতিয়াক শিকদারসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।