সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন এবং তার দুইপুত্র কাউন্সিলর জিএম সাদরিল ও কাউসার আহমেদ রিফাত সহ জেলা ও মহানগর বিএনপির ৪২৩জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। মামলায় ২৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৪০০জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান এবং মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধানসহ ৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ৩০ জুলাই রবিবার গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নং- ৫৬।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমন, মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও নাশকাতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার ৭জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে জানান তিনি।
গ্ৰেফতারকৃতরা হলো- নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচ এম আনোয়ার প্রধান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি’র সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. ফারুক, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি’র সদস্য ইউসুফ আলী, মুন্সিগঞ্জ জেলা গজারিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু, মুন্সীগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবুল হাসেম।
মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি’র সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি কাউন্সিলর জিএম সাদরিল, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, মহানগর জাসাসের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন ফারুক, মোহাম্মদ আলী, মো. সুবেদ আলী, সোলাইমান পলাশ, আনোয়ার হোসেন সানি, জাকির হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর, বিএনপি নেতা আতিক টেম্পু আতিক, আতিকুর রহমান প্রধান, কামরুল হাসান সেন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রিফাত সহ অজ্ঞাতনামা আসামি আরও ৪০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতার আসামিদের বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হলে আসামিদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক ওসি মো. আসাদুজ্জামান।
জানাগেছে, শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্র ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড শিমরাইল ডাচবাংলা ব্যাংক এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এসময়ে পুলিশ সর্টগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছিল। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ ৮জনকে আটক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে আহতাবস্থায় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
ওই সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওযাত হোসেন খানের উপর পুলিশ কয়েক দফা হামলা চালায় ও লাঠিচার্জ করেন। পুলিশের আঘাতে সাখাওয়াত হোসেন খান কয়েক দফা মাটিতে পড়ে যান। একই সময় সাগর প্রধান ও আনোয়ার প্রধান তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তারাও পুলিশের নির্যাতনের শিকার হোন। এর আগে মিছিলের শুরুতেই মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু পুলিশের লাঠিচার্জ ও নেতাকর্মীদের দৌড়াদৗড়িতে গুরুত্বর আহত হোন।