সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থীদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বেশকদিন ধরে চলছে মহাজোট গঠনে আসন নিয়ে ভাগাভাগি নিয় দেনদরবার। বিগত সময়ের মত এবারও মহাজোট গঠিত হলে নৌকার প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে। এরি মাঝে মহাজোটে না থাকলেও তৃণমুল বিএনপিকে নিয়ে আরো টেনশনে পড়েছে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। জেলার ৫টি আসনের মধ্যে ৪টিতে আওয়ামীলীগ এবং ৫টি আসনেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষণা করেছে। একইভাবে ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী রয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য দলের আরো বেশকজন প্রার্থী রয়েছে এখানে, যদিও তারা তেমন একটা আলোচনায় নেই এখানে।
নির্বাচন কমিশন সুত্র বলছে, আগামী ১৭ ডিসেম্বর নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরি মাঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌছাবে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি সহ ১৪ দলীয় মহাজোট। সেই পর্যন্ত চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটাতে হচ্ছে আওয়ামীলীগ সহ তাদের শরীকদলগুলোকে। যেখানে শরীক দলগুলো নিয়মিত ধর্ণা দিচ্ছে আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে। তারা চায় নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে। এমন পরিস্থিতিতে এখনো সমঝোতা হয়নি মহাজোটের। তবে ১৭ ডিসেম্বর শেষ বিকেল পর্যন্ত এই উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কাটছেনা প্রার্থীদের। তবে এসব নানা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মাঝেও চলছে নানা ধরণের জল্পনা কল্পনা সহ নানা গুজব। এর অবসান হবে ১৭ ডিসেম্বর।
নারায়ণগঞ্জ-৩(রূপগঞ্জ) আসনে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়া ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রয়েছেন নির্বাচনে। গুঞ্জন চলছে এ আসনে নৌকার প্রার্থীকে গাজীকে বসিয়ে দিতে পারে আওয়ামীলীগ। সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভুঁইয়াও করবেন প্রত্যাহার। মহাজোট গঠিত হলে নির্বাচনে থাকছেন না সাইফুল ইসলামও। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অন্যান্য ছোটদলগুলোর প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হতে হবে তৈমূর আলমকে।
নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন। মহাজোট হলে এখানে নৌকার প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে বাবুকে সমর্থন করে প্রত্যাহার করতে হবে লোটনকে। অন্যান্য দলের প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনে লড়বেন বাবু।
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে প্রায় এক ডজন খানিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪জন, যারা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। যার মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থী। এখানে নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা রয়েছেন। একাধিক প্রার্থী থাকলেও মুলত মুল সমীকরণ এই তিন প্রার্থীকে ঘিরে। মহাজোট গঠিত হলে এই আসনটি আবারো জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে হবে এবং খোকাই হবে মহাজোটের প্রার্থী। তবে নির্বাচনী মাঠে থাকবেন মাসুদ দুলাল। যদি তিনজনকেই এখানে নির্বাচনী মাঠে ওপেন করে দেয়া হয় তাহলে এখানে হবে ত্রিপক্ষীয় নির্বাচনী ভোটের লড়াই।
নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি ও তৃণমুল বিএনপি সহ ৯টি দলের প্রার্থী রয়েছে। যদিও স্থানীয়রা মনে করছেন এ আসনের বর্তমান এমপি শামীম ওসমান যেহেতু নৌকার প্রার্থী হয়েছেন, ফলে এখানে নৌকার প্রার্থীই থাকবে। ফলে মহাজোট হলে জাতীয পার্টির প্রার্থী সালাউদ্দীন খোকা মোল্লাকে প্রত্যাহার করা হতে পারে। তবে অন্যতম প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে তুণমুল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট আলী হোসেন থাকবেন নির্বাচনী মাঠে ভোটের লড়াইয়ে। সেক্ষেত্রে শামীম ওসমানের প্রধান প্রতিদ্বন্ধি হয়ে যেতে পারে আলী হোসেন। মাঠে থাকবেন অন্যান্য দলগুলোর প্রার্থীরাও।
নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী দেয়া হয়নি। এখানে জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান। এখানে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী ভুঁইয়াকেই মনে করা হচ্ছে সেলিম ওসমানের প্রধান প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী। কারন এ ছাড়াও আরো তিনটি দলের তিনজন প্রার্থী থাকলেও ভাসানীকেই এগিয়ে রাখছেন স্থানীয় ভোটাররা। ফলে এ আসনে সেলিম ওসমানের সঙ্গেও তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী ভাসানীর নির্বাচনী মাঠে হবে ভোটের লড়াই।