সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চান নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে নৌকার প্রার্থী বহাল থাকুক। কিন্তু আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা এমনটা প্রত্যাশা করলেও আওয়ামীলীগেরই একটি অংশ অপেক্ষায় আছেন কখন মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার নাম ঘোষিত হবে, সেই ঘোষণা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা লাঙ্গলের মঞ্চে ওঠে নাচানাচি করবেন। মুলত এখানে আওয়ামীলীগের শত্রু আওয়ামীলীগ নিজেই। নৌকার প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের চারপাশে ঘুরঘুর করা আওয়ামীলীগের বেশকজন নেতা ইতিমধ্যে লাঙ্গলের প্রার্থীর সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
স্থানীয়রা জানান, নৌকার প্রার্থীকে বহাল রাখতে ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের সিংহভাগ নেতাদের নির্বাচনী প্রস্তুতিতে দেখা গেলেও বেশকজন নেতাদের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও নৌকার পক্ষে পুরোদস্তর কাজ করে চলেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী সোহাগ রনি সহ আরো বেশকজন। আবার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে অনেকে ধরেই নিয়েছেন মহাজোট গঠিত হলে এখানে আবারো নৌকার প্রার্থীকে প্রত্যাহার করা হবে। ফলে আবারো মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাই হবেন মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী। ফলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের দীর্ঘ ১০ বছরের লড়াইটা আবারো ফিকে হওয়ার পথে।
এরি মাঝে দলীয় নির্দেশনা পেয়ে এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ৪জন, যাদের মধ্যে একজন বাদে বাকিদের ডাামি প্রার্থী হিসেবে ধরছেন স্থানীয়রা। ডামি প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এরফান হোসেন দ্বীপ, মারুফুল ইসলাম ঝলক ও নৌকার প্রার্থী কায়সার হাসনাতের সহধর্মিনী রুবিয়া সুলতানা। যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হেভিওয়েট প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল। এখানে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করা হলেও শক্ত প্রার্থী মাসুদ দুলালকে মোকাবেলা করতে হবে মহাজোটের প্রার্থীকে। এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা দাবি করছেন- যদি মহাজোট গঠিত হয় তাহলে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার না করে নৌকা ও লাঙ্গলের মধ্যে লড়াইটা ভোটের মাঠে হোক, কে জয়ী হয় দেখা যাক।
এদিকে যেসব নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে নৌকার নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মাঠে রয়েছেন তারা বিশ্বাস করেন এবার এ আসনে নৌকার প্রার্থী বহাল থাকবে। তাদের যুক্তি হলো- বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাকে দুইবার ছাড় দেয়া হয়েছে, যা অনেকটাই বেশি। এখানে আওয়ামীলীগের এমপি না থাকায় আওয়ামীলীগ সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা মনে করেন- এ আসনে লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি থাকার কারনে সোনারগাঁয়ে শান্তির সুবাতাস বইছে। সোনারগাঁয়ের মানুষ দশটি বছর শান্তিতে ছিলেন। সোনারগাঁবাসী উন্নয়ন পেয়েছেন বেশ। ফলে শান্তিতে থাকার ধারাবাহিকতা অটুট রাখবেন এমপি খোকা।
সূত্রে, নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনিত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মনোনিত হয়েছেন এ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এরফান হোসেন দ্বীপ, স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার হাসনাতের সহধর্মিনী রুবিয়া সুলতানা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম ভুঁইয়ার ছেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মারুফুল ইসলাম ঝলক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
এ ছাড়াও এখানে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মনোনিত প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক, মুক্তিজোটের প্রার্থী আরিফ, বিএসপির প্রার্থী আসলাম হোসাইন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী নারায়ণ দাস ও বিএনএমের প্রার্থী এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান মনোনয়নপত্র জাম দিয়েছেন, যাদের সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে বর্তমানে দেশের আলোচিত রাজনেতিক দল তৃণমুল বিএনপি এখানে কোনো প্রার্থী দেয়নি।