সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
হামলা মামলা নির্যাতন জেল জুলুম সবকিছুই পেয়েছেন তিনি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নারায়ণগঞ্জে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে বেশ আলোচিত ছিলেন সম্রাট হাসান সুজন। নির্বাচনের পূর্বে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশের পূর্ব থেকেই রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে জোরালো ভুমিকায় এবং ব্যতিক্রমী আন্দোলনে গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু আন্দোলন সংগ্রামে তিনি যেভাবে ভুমিকা রেখেছিলেন, তার সংগঠন যুবদল থেকে ঠিক তার উল্টো আচরণ পেয়েছেন, যখন তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হোন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতা সম্রাট হাসান সুজন বর্তমানে বন্দর উপজেলা যুবদলের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। এর আগে তিনি বন্দর উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও মহানগর যুবদলের সদস্য ছিলেন এবং মহানগর ছাত্রদলের সদস্যও ছিলেন। রাজপথের অদম্য সাহসী এই যুবদল নেতা বন্দর উপজেলা যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী। উপজেলার নেতাকর্মীদের একক সমর্থন ছাড়াও তার ত্যাগ ও যোগ্যতার প্রমাণ দিলেও তাকে সেই পদে অধিষ্ট করতে যেনো দায়িত্বশীল নেতারা কুণ্ঠাবোধ করছেন। বন্দর উপজেলার যুবদলের নেতাকর্মীরা এককভাবে সম্রাট হাসান সুজনের নেতৃত্ব দাবি করেছেন।
যে কারনে তার অনুগামী নেতাকর্মীরা মনে করেন, বর্তমানে দলের জন্য নিবেদিত ত্যাগী এই সম্রাট হাসান সুজন যেনো দলের কাছে বোঝা হয়ে ওঠেছেন, তখনো গ্রেপ্তার হলেও কারাগারে মহানগর যুবদলের দায়িত্বশীল শীর্ষ নেতারা সুজনের খোঁজ খবর নেননি, তাকে দেখতে যাওয়াতো দূরের কথা। দীর্ঘ তিন মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পুরষ্কারের বদলে তার কপালে জুটছে যেনো অবজ্ঞা আর অবহেলা।
ওইসময় গ্রেপ্তারকালে পুলিশি নির্যাতনে সুজনের মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে গেছে, যেখানে সরকারি দলের লোকজনও তাকে নির্যাতন করে পুলিশে দেয়। এর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। তবুও তার নেতৃত্বে কমিটি তুলে দিতে রহস্যজনক কারনে মহানগর যুবদলের শীর্ষ নেতাদের গড়িমসি। যেখানে সম্রাট হাসান সুজনের কঠোর আন্দোলনে ত্যাগ স্বীকারের কারনে মুলদলের নেতাদেরও সুদৃষ্টিতে আছেন তিনি। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ত্যাগীদের দূরে সরিয়ে দায়িত্বশীলরা চান মাইম্যানখ্যাত কর্মীদের নেতৃত্ব। যদিও সুজনের অনুগামী নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন সম্রাট হাসান সুজন মুলদলের শীর্ষ নেতাদের সুদৃষ্টিতে রয়েছেন। সুজনের ত্যাগ ও আন্দোলনে কঠোর ভুমিকায় মহানগর যুবদলের শীর্ষ নেতারা প্রসংশা করেছেন। কিন্তু নেতৃত্ব তুলে দিতে যেনো অনীহা দেখাচ্ছেন।
এদিকে বর্তমানে যুবদলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গত ৭ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপির সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সম্রাট হাসান সুজনের কঠোর ভুমিকা ছিলো চোখে পড়ার মতই। নেতাকর্মীরা যখন আত্মগোপনে তখন রাজপথে হরতাল অবরোধ করে বেশ আলোচনায় ছিলেন সুজন। সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিলো রাজপথে তার হাতে গুলাইল নিয়ে পুলিশের সঙ্গে পাল্টা এ্যাকশনের ছবিটি। সে সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যেখানে সক্রিয় আন্দোলনে অস্তিত্ব খুজে পাওয়াটা ছিলো কঠিন, সেখানে যুবদল নেতা হিসেবে সম্রাট হাসান সুজনের আন্দোলনেই ওঠে এসেছিলো যুবদলের সক্রিয়তা। প্রতিদিন সকাল দুপুর সন্ধ্যা কিংবা রাতে সুজনের আন্দোলনের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ ছিলো আলোচনার বিষয়। যেখানে মুলদলের ক্ষেত্রেও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বেও সুজন ছিলো সক্রিয়।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের বেশকটি টিম তাকে গ্রেপ্তারের বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। অতপর সরকারি দলের সহযোগীতায় পুলিশের কঠোর ভুমিকায় গত বছরের ৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে যান তিনি। গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ তিন মাস কারাভোগ করে ২৮ জানুয়ারী জামিনে মুক্তি পান। সেইসব ঘটনার বিষয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাস খানিক পূর্বে সেই বিভৎস ও কঠোর আন্দোলনে তার ত্যাগের বহিঃপ্রকাশ করেন এক পোস্টের মাধ্যমে।
তিনি তার ফেসবুকে পোস্টে সকলের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন, ‘আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত বাড়িতে আসতে পারিনি, পরিবারের কারো সাথে দেখা সাক্ষাত করতে পারিনি, প্রোগ্রাম শেষ করে পরিবারকে একবার দেখার জন্য নিজের জন্মস্থানে পা দিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ গুন্ডাবাহিনী আমার উপর কি বর্বর হামলা করে শারীরিক নির্যাতন করে র্যাবের হাতে তুলে দেয়, সেটা নিজ চোখে না দেখলে ধারণা করা যাবে না আমি কতটা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। অঝোরে রক্ত ঝরেছিলো, এ অবস্থায় র্যাব আমাকে খানপুর ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসা চলা অবস্থায় র্যাবের কাছ থেকে সদর থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে গিয়ে থানার গারদের জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলিয়ে বেদম নির্যাতন করে।