সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১ অভিযান চালিযে মানবপাচার চক্রের মুলহোতা সহ দুই মানব পাচার চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৫ মে রবিবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার, এএসপি সনদ বড়ুয়া।
তিনি জানান, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার চরজোকা এলাকার ভয়ংকর মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা মিলন ফকির’সহ মানব পাচার চক্রের সদস্য রিজাউল ফকির ও তাসলিমা বেগম’দেরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর আভিযানিক দল।
প্রাথমিক তদন্ত সূত্রে জানা যায় যে, চক্রের মূলহোতা মিলন ফকির দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া থেকে মানব পাচারের কাজ করে আসছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বেকারত্ব ও দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে বিদেশে ভালো চাকরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মানব পাচার করে আসছিল। এরই ফলুশ্রুতিতে ফরিদপুরের ভাংগা থানার গোয়ালদী গ্রামের সহিদুল শেখ এর ছেলে জুবায়েদকে বার লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে মোটা টাকার বেতনের চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে আসে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বাঁচার জন্য জুবায়েদের হত দরিদ্র বাবা-মা জায়গা-জমি বন্ধক রেখে অনেক কষ্ট করে টাকা জোগার করে উপরোক্ত মানব পাচার চক্রের সদস্য রিজাউল ফকির ও তাসলিমা বেগমকে দেয়। ইং ২৯/০৮/২০২২ তারিখে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে জুবায়েদকে পাচারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে লিবিয়া পাঠিয়ে দেয় । এরপর থেকে জুবায়েদের আর খোঁজ না পেয়ে তার বাবা-মা মূলহোতা মিলনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সে আরো দশ লক্ষ টাকা দাবী করে তার ছেলেকে ফিরিয়ে দেবার কথা বলে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে জুবায়েদ একদিন ফোন করে বলে তাকে প্রচুর অত্যাচার করেছে এবং ট্রলারে করে তাকে সাগরে নিয়ে যাচ্ছে। তার বাবা-মা এতে আতঙ্কিত হয়ে মূলহোতা মিলনকে আরো ছয় লক্ষ টাকা দিলেও তার ছেলেকে অদ্যাবধি খুঁজে না পেয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬/৭/৮ ও ১০ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
এই মানব পাচারের সাথে জড়িত চক্রটির মূলহোতা মিলন ফকির’সহ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার লক্ষ্যে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ, সিপিএসসি কোম্পানি এর একটি চৌকশ গোয়েন্দা টীম যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তাদের অবস্থান সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মানব পাচার চক্রের মূলহোতা এজাহারনামীয় ১নং আসামী মিলন ফকির (৪২), পিতা-মোঃ রিজাউল ফকির এবং মানব পাচার চক্রের সদস্য ২নং আসামী রিজাউল ফকির (৬৫), পিতা-মৃত আলিম উদ্দিন ফকির ও ৩নং আসামী তাসলিমা বেগম (৫৫), স্বামী-রিজাউল ফকির, সর্ব সাং-চরজোকা, থানা-শ্রীপুর, জেলা-মাগুরা’দেরকে সনাক্ত ও তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর অভিযানিক দল অদ্য ০৫/০৫/২০২৪ ইং তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা এলাকা হতে আসামী’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।