সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পড়েছেন বিরাট চ্যালেঞ্জে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আনারস প্রতীকের প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুকে স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের সমর্থনের কারনে চেয়ারম্যানরাও নেমেছেন আনারসের পক্ষে। যেখানে অধিকাংশ চেয়ারম্যানরা আনারসের পক্ষে প্রকাশ্যে নামলেও বেশকজন আবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন। একই প্রার্থীকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এ আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাও সমর্থন করায় এখানকার জাতীয় পার্টির একজন চেয়ারম্যানও আছেন ওই আনারসের পক্ষে। কেউ কেউ নীরব ভুমিকায় থাকলেও দোটানায় বেশ বেকায়দায় পড়েছেন তারাও। স্থানীয় আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে, সেখানে ইউপি চেয়ারম্যানরা আছেন আলোচনার খোড়াকে।
এর কারন হিসেবে স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনের শুরুতেই বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল এক ঘরোয়া বৈঠকে দাবি করেছেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর আনারস মার্কাকে এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সমর্থন করেছেন। তিনি যে কারনে আনারসের পক্ষে কাজ করার মত প্রকাশ করেন। ওই বৈঠকে ছিলেন বারদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম নিজেও। এরপর আনারসের পক্ষে মাঠে নামেন কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ও জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া। মুলত এই কজন ইউপি চেয়ারম্যান পুরোদমে আনারসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
এদের ছাড়াও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল আমিন সরকার, সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভুঁইয়া, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসু আনারসের পক্ষে কাজ করলেও তারা প্রকাশ্যে ততটা আলোচনায় নেই। লিয়াকত হোসেন খোকার সমর্থনের কারনে আব্দুর রউফ আছেন আনারসের পক্ষেই। তবে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবুর অবস্থান ঘোলাটে। তিনি মাহফুজুর রহমান কালামের ঘোড়া মার্কার পক্ষে কিনা সেটা কেউ হলফ করে বলতে না পারলেও তিনি যে আনারসের পক্ষে কাজ করছেন না সেটা অনেকেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি কায়সার হাসনাতের চাচা। গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে বাবুকে চেয়ারম্যান পদে জয়ী করতে কাজ করেছিলেন কায়সার হাসনাত। কিন্তু সেই আরিফ বাবু এখন কায়সার হাসনাতের সিদ্ধান্তের পক্ষে নেই।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম লড়ছেন ঘোড়া প্রতীকে। যেখানে ইউপি চেয়ারম্যানরা তার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে হুমকি ধমকির অভিযোগে থানায় চেয়ারম্যান মাসুম ও চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া জিডিও করেছেন। অনেকে মনে করছেন আরিফ মাসুদ বাবু ছাড়া বাকি ৯জন চেয়ারম্যান ভোটের দিন ঠিকিই আনারসের পক্ষে কাজ করবেন। কারন স্থানীয় এমপির সঙ্গে সুসম্পর্ক ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। এসব হিসেবের মাঝে বড় হিসেব হয়ে দেখা দিয়েছে- আনারসের পক্ষে কাজ করার পরেও যদি কালামের ঘোড়ার জয় হয় তাহলে তাদের প্রেসটিজের কি হবে? যে কারনে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।