সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
মোটামুটিভাবে গত ১৮ জুলাই থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন দেশে ব্যাপক নাশকতায় রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি জামাত ও এর সমমনা দলগুলো নাশকতায় জড়িত বলে সরকার পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়। প্রায় সপ্তাহ খানিক সময় দেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। সেনাবাহিনী নামিয়ে কারফিউ জারির পর পরিস্থিতি দিনকে দিন স্বাভাবিক হতে থাকে।
তবে এই সময়ের মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের অনেকেই আড়ালে চলে গেলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের নেতৃত্বে সোনারগাঁজুড়ে সতর্কাবস্থানে ছিল সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। যদিও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে একটি প্রতিবাদ সভায় দেখা যায়, ওই সভায় মাহফুজুর রহমান কালামও উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনে কালামের নেতৃত্বে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগ সতর্ক অবস্থানে থাকায় এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকায় উপজেলার কাঁচপুর এলাকায় সামান্য বিশৃঙ্খলা হলেও সোনারগাঁয়ের বাকি এলাকাগুলোতে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে পারেনি নাশকতাকারীরা। কাঁচপুরে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হলেও সেটা নেতাকর্মী ও প্রশাসনের সহায়তায় দ্রত পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। উপজেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতা আড়ালে আবডালে থাকলেও কালাম তার অনুগামী নেতাদের নিয়ে সরব ছিলেন। সার্বক্ষনিক তিনি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন এবং কখন কোথায় কোনো সহযোগীতার দরকার হলে তিনি করেছেন এবং প্রস্তুতির বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করেছেন।
এদিকে উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সোনারগাঁও পৌরসভা এলাকাটি। উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র প্রার্থী গাজী মজিবুর রহমান নারায়ণগঞ্জে বসবাস করলেও তিনি কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় তার নিজ বাড়ি সোনারগাঁয়ে অবস্থান করেন এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুত থাকেন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায়। একই সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি পৌরসভায় অবস্থান করেন এবং নিয়মিত নেতাকর্মীদের নিয়ে বসেন। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে মার্চ করেন। সার্বক্ষনিক উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। যেকোনো বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা ঠেকাতে যে কোনো সহযোগীতা করতে তিনি প্রস্তুত আছেন এমনটা প্রশাসনকে জানিয়েছেনও।
এছাড়াও উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দড়িকান্দি স্টান্ড। সনমান্দি ও মোগরাপাড়া ইউনিয়নের মাঝামাঝি এই এলাকার এখানে সার্বক্ষনিক মনিটর করেছেন কালাম অনুগামী সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যাস সাহাবুউদ্দীন সাবু। তিনিও গুরুত্বপূর্ণ এসব এলাকায় যাতে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা কিংবা নাশকতা করতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে মহাসড়কের কাছাকাছি অবস্থান নেন।
এদিকে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের কাছাকাছি অবস্থান নেন জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হামিম সিকদার শিপলু। পুরো জামপুর উপজেলায় তিনি মনিটর করেন যাতে করে কেউ এখানে বিশৃঙ্খলা কিংবা নাশকতার সৃষ্টি করতে না পারেন। এমনকি জামপুর ইুনিয়ন থেকে যেনো কোনো ব্যক্তি নাশকতার উদ্দেশ্যে বের না হতে পারে সেজন্য তিনি সকলকে সতর্ক থাকেন।
একইভাবে কাঁচপুর ইউনিয়নের কাঁচপুর এলাকায় সামান্য কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটলেও সেখানেও কালাম অনুগামী খান পরিবারের সদস্যরাও সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নেন এবং প্রশাসন ও পুলিশকে সহযোগীতা করেন বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা ঠেকাতে। আওয়ামীলীগ নেতা মাহাবুব রহমান খান, লিটন খান ও নূরে আলম খান সহ অন্যান্যরা কাজ করেছেন।
এ ছাড়াও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম উপজেলার মোগরাপাড়া এলাকায়, পিরোজপুর মেঘনা এলাকার মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কালামের নির্দেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। তিনি মহাসড়কের দুই পাশে সার্বক্ষনিক মনিটর করেন। একই সঙ্গে মহাসড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়েও নিয়মিত যাতায়াত করেন যেনো নাশকতাকারীরা বড় ধরণের কোনো নাশকতার সৃষ্টি করতে না পারেন।
উপজেলার বারদী ইউনিয়ন এলাকায় নেতাকমৃীদের নিয়ে সরব ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেনও। মুলত মাহফুজর র৮মান কালৈাম ও তার অনুগামী নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থানের কারনে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা হলেও পুরো সোনারগাঁও উপজেলা ছিল বিশৃঙ্খলা ও নাশকতামুক্ত।