সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য জয়নাল আবেদীন ওরফে আল জয়নালের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুটি চাঁদাবাজি মামলার মধ্যে একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। এর আগে দুটি মামলায় পুুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেছিলেন। ওই দুটি রিমান্ড আদেশের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বাদী পক্ষের রিভিশনও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে রিমান্ড না মঞ্জুর আদেশ বহাল রেখেছেন আদালত। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, গত ২৯ এপ্রিল সোমবার নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালত জয়নালের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলায় পুলিশের চাওয়া রিমা- আবেদন না মঞ্জুর করেন। পর দিন ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুুর রহমানের আদালতে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া ওই রিমান্ড না মঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন।
আরও জানাগেছে, গত ২৯ এপ্রিল সোমবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে চাঁদাবাজি মামলায় পুুলিশের চাওয়া রিমা-ের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত আসামির রিমা- না মঞ্জুর করে জয়নালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল রবিবার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির এর আদালতে চাঁদাবাজি মামলায় জয়নালের উপস্থিতিতে রিমা- শুনানি হয়। আসামী পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিলের আবেদন করেন এবং রিমা- শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য্য দাবি করেন। আদালত পুণরায় সোমবার শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করেন। ওই দিন রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করেন আদালত।
এখানে উল্লেখ্যযে, গত ২৪ এপ্রিল বুধবার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি মামলায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আল জয়নালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক বাদী হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সদর মডেল থানায় জমি সংক্রান্ত ঘটনায় ২০ লাখ টাকা চাঁদাদাবী মামলা করেন।
সদর মডেল থানা পুলিশ ওই মামলার সূত্র ধরে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে নগরীর এসএম মালেহ রোডে জয়নালের নিজ বাড়ির সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন আহমেদের আদালতে আল জয়নালের জামিন ও রিমান্ড শুনানির আবেদন করা হয়। পরে আদালত ২৮ এপ্রিল রবিবার জামিন ও রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য্য করে আল জয়নালকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে গত ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে আলোচিত জাতীয় পার্টির নেতা জয়নাল আবেদীন ওরফে আল জয়নালের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে কারাগারে থাকা আল জয়নালের বিরুদ্ধে আরেকটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আল জয়নাল ছাড়াও আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে এস এম মালেহ রোডের বাসিন্দা আহমেদ জুবায়ের বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
গত ২৩এপ্রিল কালীরবাজারে ২২ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আল জয়নালকে। কালীরবাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি রহমতউল্লাহ ফারুক বাদী হয়ে সদর থানায় ওই মামলার দায়ের করেন। ওই মামলায় জয়নালের ১০ দিন রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালত তা না মঞ্জুর করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়- গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে গলাচিপার আল্লামা ইকবাল রোডের আহমেদ জুবায়েরের নির্মানাধীন বাড়িতে আল জয়নাল সহ আসামিরা প্রবেশ করে। এসময় জুবায়েরের নিকট ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে মারধর করে এবং নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট করে। এছাড়া বাদীর নিকট থেকে ৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা এবং আশেপাশের থেকে ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় আসামিরা টাকা প্রদানের জন্য ১০ দিনের সময় দিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করা হয়।
মামলায়ও রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুুর করেন আদালত। একইভাবে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া এই আদেশের বিরুদ্ধেও রিভিশন দায়ের করেন। গত ৫ মে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিসুর রহমান ৮ মে আসামি পক্ষের জামিন আবেদন ও রিভিশনের শুনানির দিন ধার্য্য করেন। এদিন আদালতের বিচারক বাদী পক্ষের দুটি রিভিশন খারিজ করে দিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ফারুকের দায়েরকৃত মামলায় জামিন আবেদন মঞ্জর করেন। তবে জয়নাল পরবর্তী মামলায় এখনও কারাগারে রয়েছেন।