সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নিজেকে ছাত্রলীগের একজন ভাবতেই বেশি ভাল লাগে বলে এখনও মনে করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি। কোন রকম বিতর্কের বাহিরে থেকে দুই মেয়াদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে ৭ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন এই নেতা। একজন সাংস্কৃতিক কর্মী ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এসে হয়ে ওঠেন একজন তুখোর বক্তা। ধারণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ। সেই আদর্শে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের নেতৃত্বে ক্লিন ইমেজ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব ছেড়েছেন সাফায়েত আলম সানি। তবে ছাত্রলীগের স্মৃতি তিনি তার মনে গেথে রেখেছেন। মনে করছেন অতীত নানা কর্মকান্ড ও সুখস্মৃতি। সেই সঙ্গে তার দায়িত্ব পালনকালে যাদের সহযোগীতা পেয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব ছাড়ার ১ বছরের মাথায় তিনি তার ফেসবুকে ১০ মে শুক্রবার একটি স্ট্যাটাজ দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি তার ফেসবুুকে লিখেন, ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের থেকে বিদায় নেওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো আজ (১০মে শুক্রবার)। তবুও নিজেকে এখনো ছাত্রলীগের একজন ভাবতেই বেশী ভালো লাগে। সুদীর্ঘ ৭টি বছর (দুই মেয়াদে) নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছি, অনেক কিছুই করার ছিল, আবার নানা কারনে অনেক কিছু করতেও পারিনি। তবুও ব্যর্থতার সকল দায়ভার আমার উপর নিচ্ছি।’
তিনি আরও লিখেন, ‘তবে শতভাগ চেষ্টা করেছি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য আমার বাবা মায়ের মাধ্যমে পরিবার থেকে যে মূল্যবোধের শিক্ষা পেয়েছি তা কাজে লাগিয়ে এবং আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু মুজিব আদর্শের আলোক বিচ্ছুরণের বাতিঘর জননেতা একেএম শামীম ওসমান ভাইয়ের নেতৃত্বে সততা ও ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করতে। কতটুকু পেরেছি তা বিশ্লেষণ করার জন্য তো রয়েছে আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, সাংবাদিক ভাইয়েরা এবং যাদের জন্য আমাদের এই পথচলা সাধারণ ছাত্র ছাত্রী ভাই বোনেরা।’
শেখ সাফায়েত আলম সানি লিখেন, ‘যতটুকু কাজ করেছি তার চেয়ে অর্জনের পাল্লাটাই বেশী। যে অকৃতিম ভালবাসা আমি পেয়েছি, সে তুলনায় কিছু করতে পারিনি তাদের জন্য। সেই অজ¯্র ভালবাসা থেকে তিনটি ঘটনা আজ তুলে ধরছি।’
যেখানে প্রথম ঘটনায় তিনি লিখেন, ‘সম্ভবতো ২০১৩সালে, একজন সনামধন্য মসজিদের (ফকির টোলা মসজিদের) ইমাম সাহেব ফোন দিয়ে বললেন যে, তার ছেলেকে আমার সাথে ছাত্রলীগ করতে দিবে, তার ছেলের নামও সানি। যে সময়ে রাজনীতি করা বাবা মায়েরা তার ছেলেকে রাজনীতি করতে দেয় না, সে সময়ে একজন ইমাম তার ছেলেকে আমার সাথে ছাত্রলীগ করতে দিতে চায়, এটা আমার জন্য অন্য রকম গৌরবের।’
দ্বিতীয় ঘটনা স্মরণ করে তিনি লিখেন, ‘ছাত্রলীগের এক সহযোদ্ধা হঠাৎ এসে আমার হাতে কিছু টাকা দিলো। দিয়ে বলল এটা আমার চাকরীর প্রথম উপার্জনের টাকা। বাবা মাকে দেওয়ার পরে বাকিটা আপনার জন্য রেখেছি। আমি সেই টাকাটা ফিরিয়ে দেই নাই, রেখে দিয়েছি। তার চোখে মুখে আমার প্রতি তার নিখাদ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আমি দেখেছি যার প্রতিদান আমি কখনোই দিতে পারবো না।’
তৃতীয় ঘটনা স্মরণ করে তিনি লিখেন, ‘আমার আরেক সহযোদ্ধার মা আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, বাবা আমার ছেলেটা খুব অসুস্থ, (লিভারে সমস্যা) ডাক্তার বলছে আরো তিন মাস বেড রেস্ট নিতে কিন্তু ওকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না। বারবার বের হতে চায়, তোমাকে খুব পছন্দ করে তোমার কথা শুনবে, তুমি একটু বুঝিয়ে বলো বাবা। নেও তোমার সাথে কথা বলবে, ফোনটা ধরে কান্না করতে করতে বলে ভাইয়া আমি প্রোগ্রামগুলোতে আসতে পারতাছি না, আমার জন্য দোয়া করবেন যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যোগ দিতে পারি। ছাত্রলীগের প্রতি এবং আমার প্রতি তার প্রেম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না আমার।’
‘অজ¯্র ভালবাসা থেকে তিনটি গল্প আপনাদের সাথে আজ প্রকাশ করলাম। ভালো থাকুক প্রাণের সংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, ভালো থাকুক ভালবাসার সকল সহযোদ্ধারা, জাগ্রত হোক সবার ভিতরে মুজিববাদের মানবতা।’
‘পুনশ্চঃ আমি ছাত্রলীগের সবাইকে সহকর্মী না লিখে সহযোদ্ধা সম্বোধন করি, কারণ ১৯৫২ সাল থেকে আজ-অবদি প্রকৃত ছাত্রলীগের ছেলেরা দেশের জন্য যুদ্ধই করে যাচ্ছে- হোক সেটা মাতৃভাষা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা রক্ষা কিংবা মূল্যবোধ তৈরির ক্ষেত্রে।’