ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা: বিএনপির প্রতিবাদ নিন্দা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার জন্য হামলাকারীরা নতুন ষড়যন্ত্র এটেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। বিএনপির অভিযোগ- টিপুর উপর সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাচেষ্টা মামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হামলাকারী বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা সরকারি দলের অর্থে পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা করে আসছিল সেই থেকেই। তারাই এই মামলা দায়েরে ইন্ধনদাতা। থানায় মামলা করতে দৌড়াদৌড়ি করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পক্ষটি। টিপুর উপর হামলাকারী নুর হোসেনের পক্ষে আদালতে বিএনপির ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মীদের আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবার।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ- বিএনপির নেতাকর্মীরা শুরুতেই অভিযোগ করে আসছেন বহু অপকর্মের হোতা নূর হোসেন হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধানের সহযোগী। তাদের সহযোগীতায় গত সাড়ে ১৫ বছর বন্দরে দাবিয়ে বেরিয়েছে নূর হোসেন।

সেই নূর হোসেনের পক্ষে তার চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদা দাবির মামলা ঠুকে দিয়েছেন আদালতে। যেসব নেতাকর্মীরা বিগত সাড়ে ১৫ বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের আসামী করে দৃষ্টতা দেখিয়েছেন নূর হোসেন।

নূর হোসেনের পক্ষে তার ভাইয়ের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনার খবরে হতবাক হয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, বন্দরে হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করাকে কেন্দ্র করে নূর হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গত ৬ সেপ্টেম্বর আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে হত্যা চেষ্টার মামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যই আরেকটি মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সুবিধাদি ওসমান পরিবারের দালাল বহিষ্কৃত আতাউর রহমান মুকুল ও পদত্যাগকারী আবুল কাউসার আশার যোগশাজসে একটি মিথ্যা ও কাল্পনিক ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের লোক দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা বন্দর থানায় গিয়ে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করতে চেয়েছিল কিন্তু পুলিশ তা গ্ৰহণ করেনি। এরপর আদালতে মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি কাউন্সিলর শাহেন শাহ আহমেদ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন, মুসাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহমেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুল সহ ১৩জনের নামে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে চাঁদা দাবিতে মারধরের অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়।১৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬ নং আমলী আদালতে মামলার আবেদন করেন নূর হোসেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন।

নুর হোসেনের ভাই বাদী শাহাদাত হোসেন মামলার ঘটনার তারিখ দেখান ৬ সেপ্টেম্বর এবং ঘটনাস্থল দেখান বন্দর তিনগাঁও পশু হাসপাতালের সামনে। তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা চাাঁদা দাবি করা হয়, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নূর হোসেনকে মারধর করা হয়।

এই মামলাকে মিথ্যা হয়রানিমুলক মামলা বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর বিএনপি। ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে আবু আল ইউসুফ খান টিপু এই মিথ্যা মামলার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, যারা এই মিথ্যা মামলা দারের পেছন থেকে ইন্দন দিচ্ছে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে নবীগঞ্জ এলাকায় আমার উপর নূর হোসেনসহ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যাচেষ্টা চালালো। বন্দর থানায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাকে হত্যাচেষ্টার মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অথচ নূর হোসেনের ভাইয়ের মামলায় বলা হচ্ছে তিনগাঁও পশু হাসপাতালের সামনে নূর হোসেনের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। এতেই বুঝা যায় এই সাঁজানো মামলা টিকবে না। এছাড়াও আমার উপর সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাচেষ্টা মামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হামলাকারী বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা সরকারি দলের অর্থে পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা করে আসছিল শুরু থেকেই। তারাই এই মিথ্যা মামলা দায়েরে ইন্ধনদাতা। আশা করবো পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবে। আমরা এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।

এই ঘটনায় তীব্র ও প্রতিবাদ জানিয়ে মিথ্যা মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার হুমায়ুন কবির, আনোয়ার হোসেন আনু, এমএইচ মামুন, শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন সহ মহানগর বিএনপির নেতারা।

এ ছাড়াও মিথ্যা এই মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপি, বন্দর উপজেলা ও থানা বিএনপি, মহানগর যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল সহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো।