ডেস্ক রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হেফাজত নেতা ইকবালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার পর রিমাণ্ডে নিয়ে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগে সাবেক দুই এমপি, সাবেক এসপি, সাবেক ইউএনও, সাবেক ওসিসহ ১২৮ জনের নামে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২১ অক্টোবর সোমবার মো. শাহজাহান শিবলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামী হিসেবে সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, নারায়ণগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল জালম, মতিঝিল জোনের ডিবির এডিসি আতিকুল ইসলাম মুরাদ, সোনারগাঁ থানার সাবেক ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) এসএম শফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ ডিবির সাবেক ইন্সপেক্টর মো. এনামুল কবির, সোনারগাঁ থানার সাবেক ইন্সপেক্টর হাফিজুর রহমান, ধামগড় ফাঁড়ি পুলিশের ইন্সপেক্টর এমদাদ হোসেন তৈয়ব, তালতলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফরিদ আহমেদ, ডিবির এসআই ইয়াউর, এ.এস আই এজাজুল হক, এসআই (নিরস্ত্র) এইচ ছাত্রলীগের এম ইমন, সোনারগাঁ থানা সাবেক সহসভাপতি শাহ মো. সোহাগ রনি, সোনারগাঁ থানা যুবলীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম নান্নু (৪৬), সোনারগাঁ থানা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি মো. সাগর ( ২৪), দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাংবাদিক ও সোনারগাঁ ৭১ ঘাতক দালাল নির্মূল ক্লাবের (৫৪), নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও জার্নালিস্ট সভাপতি এনামুল হক শেখ বিদ্যুৎ সোনারগাঁয়ের সাবেক উপজেলা অফিসার মো. আতিকুল ইসলামসহ (৪৮) ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকী আসামীরা হলো, শহীনগরের মো: ফারুক হোসেন রিপন (৪৫), রূপগঞ্জের মর্তুজাবাদের দুই সহোদর মোঃ কাজল (২৫) ও (২০) মোঃ জুয়েল (২৮), ফতুল্লার সরকার বাড়ির মোঃ সায়মন (৪৫), মহজমপুরের দুই সহোদর আলী হোসাইন (৫২) ও মোঃ জাকির হোসেন (৪৫), মদনপুর দেওয়ানবাগের আবু সিদ্দিক (৩০), ফতুল্লার মোঃ খলিলুর রহমান (৫০), সাওঘাট এলাকার মোঃ শফিকুল ইসলাম শফিক (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলীর মোঃ স্বপন (৪৫), শহীদনগরের মোঃ মামুন মিয়া (৪৬), উত্তর চাষাঢ়ার নিয়াজ উদ্দিন (৫৫), মোগড়াপাড়ার আনোয়ার হোসেন (৪০), সাওঘাট এলাকার মোঃ নাজির হোসেন – (৪২), জব টিভি ও আজকের সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ নূর নবী জনি (৪২), পানাম এলাকার ইমরান হোসেন দুলাল (৫০), আকাশ আহমেদ শান্ত (৪৩), বন্দরের ৭৫৩/১, উইলসন রোডের গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী (৫৬) ও তার পুত্র মোঃ রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (৩৭), – সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদীর উম্মে ন রুমা সিমু (৩৯), মোঃ শাহিন ওরফে সানু বোন মোসাঃ বানু আক্তার (৫০), গোদনাইলের সালাউদ্দিন ভূইয়া (৫২), রাজীব, সুমিলপাড়ার মানিক (৪০), কদমতলীর মোঃ শাহজাহান (৫২), সাদিপুরের মোঃ ইব্রাহিম (৪০), বার্মাশীলের মোঃ ইরফান (৩২), ওবায়দুল্লা বাদল (৩৮), আব্দুর রহিম (৪০), মোঃ রাসেল (৩০), মোঃ শরিফ (৩৮), আবুল কাসেম মেম্বার (৭০), সৈয়দপুরের মোঃ তোফাজ্জল হোসেন টিয়া (৫৫), সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের পুত্র আবিদ মন্ডল (৩০), মোঃ সালাম চেয়ারম্যান, হাবিবুর রহমান ভাঙ্গা হাবিব (৫২), পশ্চিম লামাপাড়ার মোঃ মোতালেব (৫০), সুমিলপাড়ার মোঃ খোকন মাতবর ), শহিদুল হাওলাদার (৩৭), গোলনগরের মোঃ মামুন ভূইয়া (৩৮), কাজী মাসুদ ৪২), নানার্থী দক্ষিণপাড়া এলাকার আয়নাল হক (৫৫), কাজহরদী এলাকার আবুল কালাম মেম্বার (৪৫), আব্দুল কাদির (৪৫), দেওয়ানবাগ এলাকার বাবুল ওরফে বাবু মেম্বার (৫০), বন্দরের সুরুজ মিয়া (৬০), মদনপুরের মোঃ আবুল বাশার আকন (৪০), কাঁচপুরে সজিব প্রধান (৩৬), এনায়েত নগর ইউনিয়নের আসাদুজ্জামান ওরফে জামান চেয়ারম্যান (৫৯), ফতুল্লা ইউপির চেয়ারম্যান ফায়জুল ইসলাম (৫৫), কুতুবপুর ইউনিয়নের মনিরুজ্জামান সেন্টু চেয়ারম্যান (৫৪), মিজমিজির মোঃ জয়নাল ওরফে জনি (৫৮), নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের মোঃ জামাল (৩৫), কেওঢালা এলাকার মোক্তার হোসেন (৪৫), ফতুল্লা যমুনা ডিপোর জয়নাল আবেদীন টুটুল ওরফে ব্রাজিল টুটুল (৫০), কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রধান (৬০), গোদনাইল পদ্মা ডিপোর মোঃ ফারুক (৪৫), দেওভোগ পাক্কা রোড গার্মেন্টস গলির মোঃ মানিক (৫৯), ৫নং ঘাটের আব্দুল ওরফে মোটা আব্দুল (৫৮), গোদনাইলের মোঃ মাসুম (৪০), সাইজুদ্দিন মাদবরের পুত্র মাসুম (৫৫), শাহজালাল সাব (৫০), মোঃ রাজিব (৪০), ফতুল্লার রূপসী হাউজিং এর সুমন (৪০) কেওঢালা এলাকার মোঃ রাজ (৪৫), এসও রোডের দুই সহোদর মোঃ রাশেদ (৫০), মোঃ শরীফ মহাজন (৫২), মোঃ মাহাবুব ওরফে মামুন (৪৩), মোঃ নাছির উদ্দিন (৪৫), সোনারগাঁয়েন বিদ্যুৎ শেখ (৪৬), মুন্সিখোলার বারেক সিদকার (৬০), সুমিলপাড়ার আল আমিন (৪২), সাদিপুরের মোঃ ইব্রাহিম (৪৫), সুমিলপাড়ার মোঃ হানিফ (৪৫), শেখ কান্দি এলাকার মাইনুদ্দিন (৫৫), শাহজাহান (৪২), জুলহাস (৩৫), লাদুরচরের শাহজাহান (৪৫), শফিকুল মাস্টার (৪৫), জহিরুল মেম্বার (৪২), মোস্তফা (৫০), মিঠু (৪৮), পিতাঃ দেওয়ান উদ্দিন চুন্নু, সাং-লাদুরচর, (১০২), সোহেল (৩৫), পিতা জালাল, সাং-লাদুরচর, রাসেল (৪২), আনোয়ার মেম্বার (৪৫), দর্পন (৪৫), আবু কাউসার (২৫), কামাল (৪২), কাজী মাহফুজ (৩৬), সাবেক চেয়ারম্যান সাদিপুর ইউপি আব্দুর রশিদ মোল্লা (৭০), সালাউদ্দিন মাসুম (৪৫), তোফাজ্জল হোসেন তুহিন (৪০), মাসুম (৩৬), মোঃ বাদশা মিয়া (৩৫), উসমান (৩০), রাব্বি (২৩), রেজাউল করিম (৫৫), মোঃ কামাল (৪৮), মোঃ ইসহাক (৬০), ওসমান খান (৫০), নিয়ন সুমন (৩৫), মোঃ মোজাম্মেল (৫০), মোঃ ইকবাল (৩৫), মোঃ শামীম আহাম্মেদ রিয়াদ(৪৫), অমল পোদ্দার (৫৫), মোঃ হাবিব তালুকদার (৫২), শহরের বালুরমাঠের নবনিত সাহা (৪৫), আমলাপাড়ার সুজিত সাহা (৫৫), চাষাড়ার অনুপ সাহা (৬৫)।
ঘটনার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, গত ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক স্ত্রীসহ সোনারগাঁ থানাধীন খাসনগর দিঘীরপাড় এলাকাস্থ রয়েল রিসোর্ট হোটেলে অবকাশ যাপনকালে ১ ও ২নং আসামীর গোপন ষড়যন্ত্র মোতাবেক মামুনুল হক সাহেবকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে এবং রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার হীন মানসে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ৩নং আসামী হতে ১২নং আসামীর নির্দেশে অন্যান্য সকল আসামীগণসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জন আসামী একত্রে জোটবদ্ধভাবে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় মামুনুল হককে স্ত্রীসহ রিসোর্ট হতে জোরপূর্বক বাহিরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে।
এর ধারাবাহিকতায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁ থানা এলাকার হেফাজতকর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেনসহ (৬০) আরও অনেকে সোনারগাঁ থানাধীন মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান করে একত্রিত হয়ে মাওলানা মামুনুল হককে-স্ত্রীসহ আটক করার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করায় ১ ও ২নং আসামীর পরোক্ষ উস্কানিতে ৩নং আসামী হতে ১২নং আসামীদের হুকুমে অপরাপর উল্লেখিত আসামীগণসহ আরও ১০০- ১৫০ জন আসামী একত্রে সেখানে উপস্থিত হয়ে মাওলানা ইকবাল হোসেনকে খুন করার উদ্দেশ্যে জোটবদ্ধভাবে এলোপাথাড়িভাবে কিল-ঘুষি ও লোহার রড, লাঠি দিয়া মাথাসহ শরীরের অন্যান্য জায়গায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। জখম অবস্থায় ইকবাল হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে সোনারগাঁ থানার মামলায় কোর্টে চালান দেয়। উক্ত মামলায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে সোনারগাঁ থানা পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার নামে ১ ও ২নং আসামীর উস্কানিতে ৩নং হতে ১২নং আসামীরা তাকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতন করে। পুলিশের নির্যাতনে মাওলানা ইকবাল হোসেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল বেলা ১২টার দিকে মারা যান। পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করে এবং পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে। মৃতের আত্মীয়-স্বজন লাশ বাড়িতে এনে পারিবারিকভাবে দাফন কাফন সম্পন্ন করেন। উল্লেখিত আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে উস্কানি ও হুকুমের মাধ্যমে খুন করার উদ্দেশ্যে মাওলানা ইকবাল হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে মারধর ও নির্যাতন করে হত্যা করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।