জিনিয়াস ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জে ২০০৫ সাল থেকে বৃত্তি প্রকল্প চালু করেছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো সমাজের মেধাবী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। বাংলাদেশে শিক্ষার প্রসারে এই ধরনের বৃত্তিমূলক প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য যারা অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে পারে। জিনিয়াস ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জসহ আশেপাশের অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
এই বৃত্তি প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্তরে বৃত্তি প্রদান করা হয়। সাধারণত,প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি লাভ করে থাকে। মেধা ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়। শুরুতে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা যাচাই করা হয়, যার পরে তাদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা যাচাই করা হয়। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের পুরো শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যে বইপত্র, শিক্ষাসামগ্রী এবং পরীক্ষার ফি প্রদানের পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। এর ফলে এই শিক্ষার্থীরা কোনো আর্থিক সংকট ছাড়াই শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে পারে এবং তাদের ভবিষ্যতের পথ সুগম হয়।
এছাড়া, জিনিয়াস ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। এই কর্মশালাগুলোতে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দক্ষতা, যোগাযোগের দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদান করি না, বরং তাদের সর্বোচ্চ সফলতা অর্জনের জন্য মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরিক প্রস্তুতির ব্যবস্থা করি।” ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনে কেবলমাত্র পাঠ্যসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী ও উদ্যোমী হয়ে ওঠে। এই ধরনের প্রশিক্ষণ তাদের ভবিষ্যতের চাকরি বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে সাহায্য করে।
জিনিয়াস ফাউন্ডেশনের এই বৃত্তি প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের অনেক প্রতিভাবান শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছে, যা সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষার্থীরা, যারা বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কায় থাকে, এই ধরনের বৃত্তিমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের এবং তাদের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এমনকি অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী, যারা জিনিয়াস ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পেয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তারা এখন প্রতিষ্ঠিত পেশাজীবী। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন এই ফাউন্ডেশনের কাজে আর্থিকভাবে অবদান রাখছেন। এই ধারাবাহিকতায় জিনিয়াস ফাউন্ডেশন ভবিষ্যতেও তাদের বৃত্তিমূলক প্রকল্পটি আরও সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী। ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা একত্রে কাজ করছেন যাতে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী এই সুবিধা লাভ করতে পারে এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
সর্বোপরি, জিনিয়াস ফাউন্ডেশনের এই বৃত্তি প্রকল্প শুধু শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে একটি বড় অবদান রাখছে। এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ, যা বাংলাদেশে শিক্ষার অগ্রগতিতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি