সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
অর্থ, লবিং, গ্রুপিং আর বলয়ভিত্তিক রাজনীতির কারনে পিছিয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। যারা যুবদলের রাজনীতি কোনোদিন করেনি তাদেরকে বসানো হয়েছে মহানগর যুবদলের নেতৃত্বে। একই দশায় যারা যুবদলের রাজনীতি করেননি তারাও আছেন নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায়। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যারা রাজপথ কাঁপিয়েছেন, রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা মামলা নির্যাতন জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন তারা অর্থ আর গ্রুপিং বলয় ও লবিংয়ের কাছে হেরে যাচ্ছেন। ছাত্রদলের রাজনীতি করে আসা মনিরুল ইসলাম সজল, সাহেদ আহমেদ এখন মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। মাজহারুল ইসলাম জোসেফ যুবদলের রাজনীতি না করলেও নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় আছেন সামনের সারির আলোচনায়। কিন্তু যারা যুবদলের রাজনীতি করতে গিয়ে ত্যাগী শিকার করেছেন তারা পড়েছেন পিছিয়ে।
নেতাকর্মীদের সূত্রে, প্রয়াত জাহাঙ্গীর আলম ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে যখন মহানগর যুবদলের রাজনীতি পরিচালিত হতো সেই থেকে রাজপথে আন্দোলন করে আসছিলেন মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রানা মুজিব। রাজপথ থেকে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু যুবদলের নেতৃত্ব জুটেনি তার ভাগ্যে। তিনি এখন রাজনীতিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে কৃষক দলের ব্যানারে রাজনীতি করছেন। তবুও যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে আছেন তিনি। জুয়েল প্রধান মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তিনি এখন জোসেফের নেতৃত্বে গিয়ে রাজনীতি করছেন।
একইভাবে মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক জুয়েল রানা, মহানগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন খোকন শাহ, বন্দর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান আক্তার, বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী, সহ-সভাপতি কাজী সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী নওশাদ তুষার, যুবদল নেতা মিঠু মিয়া সহ এদের অধিকাংশরা এখন খড়কুটো ধরে রাজনীতিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে জোসেফের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন। এক সময় তারা মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে রাজপথে সক্রিয় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতা জয়নাল আবেদীন, শওকত খন্দকার, সরকার মুজিব, নাজমুল কবির নাহিদ, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ অপু, রাসেল আহমেদ মনির, মোহাম্মদ শহীদ, মহিউদ্দীন, হাফেজ আব্দুর রহিমদের মত ত্যাগী নেতাকর্মীরা গ্রুপিং আর বলয়ভিত্তিক রাজনীতির কারনে আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ শিকার করেও যুবদলের শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে পারছেন না কিংবা আলোচনাতেও নাই। মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খান ও মাহাবুবুল হাসান জুলহাসের ভুমিকা মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে সবাই অবগত। আল আমিন খান ও জুলহাস রাজপথে একাধিকবার পুলিশি পিটুনির শিকার হয়েছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। কিন্তু মহানগর যুবদলের নেতৃত্ব ছাত্রদল নেতাদের হাতে চলে যাওয়ায় এসব নেতারা পড়েছেন বিপাকে। তাদের যেনো সঠিক মুল্যায়ণের কেউ নাই।
মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ২৯ আগস্ট মহানগর যুবদলের তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজলকে আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাহেদ আহমেদকে করা হয় সদস্য সচিব। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসেন মহানগর যুবদলের বিগত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। কিন্তু সজল ও সাহেদের নেতৃত্বে মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে প্রভাব এখন সাবেক ছাত্রদল নেতাকর্মীদের। যে কারনে যারা মহানগর যুবদলের রাজনীতি করে আসছেন ১২/১৪ বছর ধরে তাদের সেখানে মুল্যায়ণ নাই।
এসব কারনে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আশ্রয় নিয়েছে মাজহারুল ইসলাম জোসেফের ছায়াতলে। তারা আশা দেখছেন সামনের কমিটিতে জোসেফ নেতৃত্ব পাবেন। সেক্ষেত্রে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মুল্যায়ণ হবে মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে। যদিও বর্তমান কমিটি হওয়ার আগেও নেতাকর্মীরা জোসেফকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু জোসেফ নেতৃত্ব পাননি। এদিকে বহু নেতাকর্মী এখনো মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের পাশে থেকে রাজনীতি করছেন। তারা আশা দেখছেন সামনের মহানগর বিএনপির কমিটিতে জায়গা পাবে খোরশেদ। সেক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে মহানগর যুবদলের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব পদে খোরশেদের ঠাঁই মিললে মুল্যায়ণ ঘটবে মহানগর যুবদলের রাজনীতি করে আসা আল আমিন জুলহাসদের মত ত্যাগী নেতাকর্মীদের।