ডেস্ক রিপোর্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমোদের স্বপ্ন ছিল ৫ আগস্টের পর আমাদের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। কিন্তু আমরা দেখছি কামার, কুমার, খেটে খাওয়া মানুষ, রাজমিস্ত্রি রিকশাচালক, শ্রমজীবী, পেশাজীবী মানুষ তাদের অভ্যুত্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় রয়েছে। আমরা যখন সিএনজিওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলি, তখন শুনি তাদেরকে চাঁদা দিয়ে রাস্তায় সিএনজি চালাতে হয়। ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হয়।
১৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে পথসভা ও গণসংযোগে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, পুলিশ এখনো মামলা বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশ হওয়ার কথা ছিল জনতার পুলিশ। আমরা চেয়েছিলাম জনতার পুলিশ ক্ষমতার কাঠামো ভেঙে জনতার কাতারে নিমে আসবে। কিন্তু দেখছি মামলা বাণিজ্য। মামলা দিয়ে এই দেশে ব্যবসার নতুন একটা উপলক্ষ্য তৈরি করা হয়ছে। আমরা ৫ আগস্টের পর যে স্বপ্ন দেখেছি তা দিন দিন স্থিত হতে যাচ্ছে। এই স্বপ্ন দিন দিন আশাহত হয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই আমাদের প্রোক্লেমেশন রেজুলেশনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে। এই রেজুলেশনে আমাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে প্রোক্লেমেশন ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর যে শাসন ব্যবস্থা প্রণয়ন করছে, কায়েম করছে, সে শাসন ব্যবস্থা হলো আইয়ামে জাহেলিয়া। এই আইয়ামে জাহেলিয়ায় আমরা মানুষ হিসেবে স্বীকৃত ছিলাম না। আমরা নাগরিক হিসাবে স্বীকৃত ছিলাম না। এ আইয়ামে জাহেলিয়ার সময় এই নারায়ণগঞ্জ ছিল শামীম ওসমানের, সেলিম ওসমানের নারায়ণগঞ্জ।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের সমান নায্য হিস্যা রয়েছে। এখানে কোনো ব্যক্তির ইতিহাস হিস্যা রাখবেন না। এদেশ কারো বাবার পেতৃক সম্পত্তি না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে নিয়ে পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব না। সুতরাং যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করছেন, আপনাদেরকে সতর্ক করতে চাই। ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ আপনাদের কম্প্রোমাইজ পলিটিক্সকে আমরা নির্বাসনের ব্যবস্থা করব। আপনারা যদি মনে করেন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করবেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফিরে আনবেন। আমাদের লাশের ওপর দিয়ে তাদের রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে হয় ছাত্র নাগরিক থাকবে না হয় আওয়ামী লীগ থাকবে। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, শাপলা চত্বরের বিচার নিশ্চিত করত হবে। আমরা বিগত ৩টা ইলেকশনে ভোট দিতে পারিনি। আবার যারা ভোট দিয়েছে ১০টি দিয়েছে। তারা দিনের ভোট রাতে দিয়েছে। এই যে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে, তার জন্য অবশ্যই বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গণসংযোগ ও পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, শওকত আলী, তামিম আহমেদ প্রমুখ।