সোনারগাঁও পৌরসভায় আ’লীগ-জাতীয়পার্টিবিহীন নির্বাচনী আলোচনায় বিএনপি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আওয়ামীলীগ সরকার আমলেই ২০২১ সালের পর থেকে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা মামলায় আটকে আছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনটি। বর্তমান পরিস্থিতি আর নির্বাচনী পরিবেশও নেই। এবার আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া খালি মাঠে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। যদি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় তাহলে দলের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বিএনপির বেশকজন নেতা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলে বিএনপির একাধিক নেতাকে প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। আওয়ামীলীগ কিংবা জাতীয় পার্টি ছাড়া নির্বাচন হলে একক দাপট নিয়ে মেয়র হতে পারে বিএনপির কেউ। যদিও জাতীয় পার্টির এমপি থাকাকালীন সময়ে এখানে জাতীয় পার্টির দাপট থাকলেও বর্তমানে জাতীয় পার্টির এখানে অস্তিত্ব খুজে পাওয়া কঠিন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টের পর সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। যার যার পছন্দের সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে ব্যানার ফ্যাস্টুন সাটিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ। তবে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে কোনো প্রার্থীই এখনো সরাসরি নির্বাচনের ঘোষণা দেননি। যেখানে কর্মী সমর্থকদের মাঝে নেতাদের নিয়ে চলছে জোর আলোচনা ও প্রচার প্রচারণা। একাধিকবার নির্বাচনের সম্ভাবনা জাগলেও নির্বাচন হয়ে ওঠেনি এখানে।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে তৎকালীন স্থানীয় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা তার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকতকে নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। মেয়র পদে বেশ জোরালো প্রচার প্রচারণাও চালান ডালিয়া লিয়াকত। কৌশলে তৎকালীন মেয়র সাদেকুর রহমানের সমর্থনও আদায় করে নেন ডালিয়া। নিজেকে নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবেও ঘোষণা দেন ডালিয়া। ডালিয়াকে নির্বাচনে নামিয়ে বিএনপি ও জাতীয়পার্টির অনেক নেতাকর্মীদের সমাগমও ঘটনা এমপি খোকা।

এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেন উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মজিবুর রহমান, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছগির আহমেদ, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন সুলতানা ঝরা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওসমান গনি। এদের মধ্যে প্রথমে ছগির আহমেদকে নিযে নির্বাচনী মাঠে নেমেছিলেন ব্যবসায়ী নেতা ফেরদৌস ভুঁইয়া মামুন। এ নিয়ে এমপি খোকার সঙ্গে তার বিরোধও সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আলোচনায় আসেন মামুন ভুঁইয়া ছগিরকে সমর্থন করবেন না। তিনি তার ভাই ফারুক ভূঁইয়া অথবা মোস্তাক আহমেদকে নির্বাচনে নামাবেন।

উপরোক্ত নেতাদের মধ্যে ২০১১ সালে আওয়ামীলীগের সমর্থন নিয়ে গাজী মজিবুর রহমান, ২০১৬ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ফজলে রাব্বী মেয়র পদে পরাজিত হোন। দুটি নির্বাচনেই জয়ী হোন সাদেকুর রহমান। ২০১১ সালে সাদেকুর রহমানকে বিএনপি সমর্থন দেয় এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনে সাদেকুর রহমানকে এমপি শামীম ওসমান ও এমপি খোকা প্রকাশ্যে সমর্থন দেন। ওই নির্বাচনে এমপি নজরুল ইসলাম বাবু তার ভগ্নিপতি ফজলে রাব্বীর পক্ষে নৌকা প্রতীক আনতে কাজ করেন। তার সঙ্গে কাজ করেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতও। কিন্তু শেষতক শামীম ওসমান ও খোকার সমর্থিত প্রার্থী সাদেক বিজয়ী হোন।

২০২১ সালের পর থেকে নির্বাচন স্থগিত হওয়া থাকা সোনারগাঁও পৌরসভা নিয়ে গত ৫ আগস্টের পর থেকে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। যে কোনো সময় নির্বাচন হলেই বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এমনটা আচ করতে পারছেন স্থানীয়রা। নির্বাচন নিয়ে মেয়র পদে প্রার্থীতা নিয়ে আলোচনায় আছেন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন, জেলা আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সাদ্দাম হোসেন, সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মিয়া, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তার ও পৌর বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম নয়ন।

যদিও এদের মধ্যে মোশারফ হোসেন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। বিগত আওয়ামীলীগ আমলেও মোশারফ হোসেনের সঙ্গে প্রার্থীর বিষয়ে আলোচনায় ছিলেন সাদ্দাম হোসেন, রুমা আক্তার ও শফিকুল ইসলাম নয়নের নাম। অতীতে রাজপথের সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না নয়ন। দেশে আলোচনায় এখন জাতীয় নির্বাচন নাকি তার আগে স্থানীয় নির্বাচন। নির্বাচনের সংস্কার কমিশন জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সুপারিশ করেছে। সেই প্রস্তুতিতে বিএনপিও নিয়ে রেখেছে।