বন্দরে লাগামহীন কাজী সোহাগ ও হুমায়ুনের দখলবাজি চাঁদাবাজি: বিএনপির দূর্নাম!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ বন্দর শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাশের ঘাট স্ট্যান্ড দখলবাজি চাঁদাবাজি নিয়ে বিএনপির যুবদলের নামধারী দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলিতে বিএনপির বদনাম করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণের মাঝে বিএনপিকে বিতর্কিত করছে কাজী সোহাগ ও হুমায়ুন কবির নামে দুই ব্যক্তি। যারা নিজেদের মহানগর যুবদলের আওতাধীন বন্দর থানা যুবদলের শীর্ষ পদের পরিচয় দিচ্ছেন।

এদিকে তাদের এই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছেন মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ। ২৩ জানুয়ারী গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে মনিরুল ইসলাম সজল ও সাহেদ আহমেদ জানিয়েছেন, বন্দর থানা যুবদলের কোনো কমিটি নেই। কাজী সোহাগ ও হুমায়ুন কবির যুবদলের কেউ নয়। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায় মহানগর যুবদল নিবে না।

যদিও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বন্দর থানা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কাজী সোহাগ ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হুমায়ুন কবির ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। সেই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করা হলেও সেই কমিটির কার্যক্রম নেই। ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আলী নওশাদ তুষার। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে হুমায়ুন কবির নিজেকেই সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বন্দরে হাট ঘাট মাঠ বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণে নিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যদিও ৫ আগস্টের পূর্বে রাজপথের সক্রিয় আন্দোলনে তার সেভাবে অংশগ্রহণ দেখা যায়নি। দুই সপ্তাহ পূর্বেও হুমায়ুন কবির ও কাজী সোহাগ একসাথে মিছিল করে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ আহমেদের কর্মসূচিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু এখন বন্দর ঘাটের স্ট্যান্ড দখলবাজি চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে বন্দরের বিভিন্ন স্ট্যান্ড দখলবাজি ও চাঁদাবাজি নিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে হুমায়ুন কবির ও কাজী সোহাগ। কাজী সোহাগ এক গ্যারেজের মালিককে মাটিতে পিষিয়ে ফেলার ঘোষণার ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কদিন আগেও একই বিষয় নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটায় কাজী সোহাগ। ৫ আগস্টের পর জোর করে নিজেকে বন্দর থানা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বনে যান হুমায়ুন কবির।

অন্যদিকে বন্দরে সিএনজি ও অটো স্ট্যান্ড দখল নিতে গিয়ে হুমায়ুন কবির ও কাজী সোহাগ গ্রুপের মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় বেশকটি সিএনজি ভাংচুর করা হয়। এ নিয়ে কাজী সোহাগ সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিএনজি স্ট্যান্ড এর চালক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক পরিচয়দানকারী মোঃ আনোয়ার মোল্লা (৫৯)।

বন্দর থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিবাদী ১. কাজী মাহবুব সোহান ওরফে কাজী সোহাগ (৩৫), ২. স্বদেশ (৩১), উভয় পিতা কাজী সালাউদ্দিন, স্থায়ী: (বন্দর বাজার কাজীবাড়ি উইলসন রোড), ৩. আকাশ (৩৫), পিতা-মৃত গরিব উল্লাহ, স্থায়ী: (মিয়া বাড়ি, সিরাজদুল্লাহ ক্লাব সংলগ্ন, উইলসন রোড নাসিক-২২নং ওয়ার্ড), ৪ কিমন খান (২৮), পিতা-মোঃ রশিদ, স্থায়ী: (খান বাড়ি, নাসিক-২৩নং ওয়ার্ড), ৫. মোঃ রশিদ (৫৫), পিতা-নায়েব আলী, স্থায়ী: মদনগঞ্জ, নাসিক- ১৯নং ওয়ার্ড), ৬. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কালা জাহাঙ্গীর (৩৫), পিতা-আশরাফ উদ্দিন, স্থায়ী: দড়ি সোনাকান্দা নাসিক- ২০নং ওয়ার্ড), ৭. শাহীন (৪৯), পিতা-মোঃ ইউসুফ, স্থায়ী: (জিওধরা, আদমপুর), ৮. আব্দুর রহমান (৪৫), পিতা-কালু মিয়া, স্থায়ী: (রেলী আবাসিক এলাকা), সর্ব উপজেলা/থানা- বন্দর, জেলা নারায়ণগঞ্জদের সহ অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনদের বিরুদ্ধে বন্দর থানাধীন বন্দর ঘাট সিএনজি স্ট্যান্ডে উক্ত ১ নং বিবাদীর নেতৃত্বে ২ হতে ৮ নং বিবাদীগনসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন বন্দর ঘাট সিএনজি স্ট্যান্ডে আসিয়া চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপকর্ম করিয়া বেড়ায়। উক্ত বিবাদীদের ভয়ে এলাকায় কেউ সাক্ষী দিতে সাহস পায় না। বিবাদীদের কিছু বলিতে গেলে বিবাদীগন তাদের বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি প্রদান করিত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১/০১/২০২৫ ইং তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় উক্ত ১ নং বিবাদীর নেতৃত্বে ২ হতে ৮ নং বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন বন্দর থানাধীন বন্দর ঘাট সি এন জি স্ট্যান্ডে আসিয়া বিবাদীরা ষ্ট্যান্ডে থাকা সি এন জি ড্রাইভারসহ ষ্ট্যান্ডের আশেপাশে থাকা বিভিন্ন দোকানদারদের গালিগালাজ করিতে থাকে। ১ নং বিবাদী তাহার সাথে থাকা পিস্তল দিয়া ফাঁকা গুলি করিলে জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিবাদীরা স্ট্যান্ডে থাকা ০৫/০৬ টি সি এন জি ভাংচুর করিয়া অনুমান ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে আশেপাশের উত্তেজিত জনতা ঘটনাস্থলে আসিয়া বিবাদীদের ধাওয়া করিলে বিবাদীরা আমাদের বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করিয়া ঘটনাস্থল হইতে চলিয়া যায়। বিষয়টি বন্দর ঘাট সিএনজি ষ্ট্যান্ডের সকল ড্রাইভার ও কমিটির লোকজনদের সহিত আলোচনা করিয়া থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।